শিরোনাম
শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অন্ধ হয়েও বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক

অন্ধ হয়েও বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক

সাহিত্যিকদের সর্বশ্রেষ্ঠ দর্শন জমা থাকে একেকটি বইয়ে। যুগে যুগে শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকদের বহু সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি হয়েছে। এসব সাহিত্যকর্মের ছোট কোনো তালিকা করা আদৌ সম্ভব নয়। তবে কালজয়ী সাহিত্যকর্মের তালিকায় বারবার কয়েকটা বইয়ের নাম উঠে এসেছে। পাঠকপ্রিয়তার দিক থেকেও তাদের আবেদন সময়কে জয় করেছে। বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের করা সেই তালিকা থেকে একটি বইয়ের আলোচনা এখানে।

 

প্রাচীন রোমের মহাকবি কবি হোমার

হোমার কিংবদন্তিতুল্য। তিনি ছিলেন প্রাচীন গ্রিক মহাকাব্যিক কবি। হোমার তার রচনার পরিচয়ে বেশি পরিচিত। ইলিয়াড অ্যান্ড ওডিসি মহাকাব্য এবং হোমারীয় স্তোত্রাবলির রচয়িতা হিসেবে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন তিনি। সেই সাহিত্যিক মর্যাদা এখনো সারা বিশ্বে তাঁকে অতুলনীয় করে রেখেছে। হোমারের মহাকাব্যগুলো থেকেই পাশ্চাত্য সাহিত্য ধারার সূচনা হয়েছিল- এমনটিই মনে করেন বিশ্লেষকরা। কথাসাহিত্য ও সাহিত্যের সাধারণ ইতিহাসে এই দুই মহাকাব্যের প্রভাব অপরিসীম। হোমার চারণ কবি হিসেবেও সমাদৃত। মজার ব্যাপার হলো- ইলিয়াড অ্যান্ড ওডিসি একই ব্যক্তির লেখা এটা ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মানুষ জানতেই পারেনি। আধুনিক গবেষকরা ‘হোমারের সময়কাল’ বলতে কাব্য রচনার সূচনাকাল ও ব্যক্তির জীবনকাল উভয়কেই একযোগে বুঝিয়েছেন। ইলিয়াড অ্যান্ড ওডিসি মহাকাব্যের আগে সম্ভবত একই দশকে রচিত হয়েছিল।

 

অনন্য নোবেলজয়ী হেলেন কেলার

১৯৫৯ সালে হেলেন জাতিসংঘ কর্তৃক বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। নকশিকাঁথা সেলাই করতেও পারতেন। তিনি জন্মেছিলেন স্বাভাবিকভাবেই। ১৯ মাস বয়সে হারান তাঁর দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি ও কথা বলার শক্তি। কিন্তু অদম্য সাহস আর ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছিল তাঁর সব প্রতিকূলতা। সব প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি হয়ে আছেন বিশ্বের অন্যতম অনুপ্রেরণীয় দৃষ্টান্ত। হেলেন মোট ১১টি বই রচনা করেছেন। এগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ, দ্য ওয়ার্ল্ড আই লিভ ইন, ওপেন ডোর, আউট অব দ্য ডার্ক ইত্যাদি। তিনি বাক, শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য তৈরি করেন যেখানে তিনি নিজেই নিজ ভূমিকায় অভিনয় করেন। তাঁর আরও কিছু অসাধারণ প্রতিভা ছিল। যেমন- তিনি বাদ্যযন্ত্রের ওপর হাত রেখেই তাতে কী সুর বাজছে তা বলতে পারতেন। এমনকি দীর্ঘদিন পরেও কারও সঙ্গে হাত মেলালে বলে দিতে পারতেন লোকটি কে। তার স্পর্শের অনুভূতি ছিল অত্যন্ত সূক্ষ্ম। তিনি নৌকা চালাতে পারতেন। নকশিকাঁথা সেলাই করতে পারতেন। তিনি দাবা, তাসও খেলতে পারতেন।

 

ললিতা [ ভ্লাদিমির নাবকোভ ]

বই : ললিতা, লেখক : ভ্লাদিমির নাবকোভ, ভাষা : ইংরেজি, ধরন : উপন্যাস, প্রকাশকাল : ১৯৫৫

ইংরেজি ভাষায় লেখা ললিতা। এ বই দিয়ে ভ্লাদিমিরকে ট্র্যাজিক কমেডি রচয়িতা হিসেবে নতুন করে চিনতে পারে বিশ্ব। ১৯৫৫ সালে প্যারিসে এবং ১৯৫৮ সালে নিউইয়র্কে ললিতা উপন্যাসটি আলোচনার ঝড় তুলেছিল। রাশিয়ান ভাষায় বইটি অনূদিত হওয়ার পর জনপ্রিয়তায় আকাশ ছোঁয়। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আর কোনো বই এত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল কি না- সেটা গবেষণার বিষয়। একদম শুরুর দিকে উপন্যাসের যে ধীরগতির রেস থাকে সেটা ছিল না এ উপন্যাসে। এ ধরনের স্টাইল পাঠককে দারুণ আকর্ষণ করে। ললিতা নামটি বিংশ শতাব্দীতেও এতটুকু আবেদন হারায়নি।

এ উপন্যাসটি যৌনাবেদননির্ভর উপন্যাসের ক্লাসিক সাহিত্যকর্ম বলে বিবেচিত। ১২ বছরের মেয়ের সঙ্গে একজন মধ্যবয়স্ক সাহিত্য-শিক্ষকের প্রেমের কাহিনি নিয়ে এর মূল প্লট সাজানো হয়েছে। সাহিত্য সমালোচকরা বলেন, গল্পে প্রেম ও যৌনতা নদীর ঢেউয়ের মতো পাঠককে দুলুনি দিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর