শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজবাড়িতে দেশি-বিদেশি শিল্পীর মিলনমেলা

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

রাজবাড়িতে দেশি-বিদেশি শিল্পীর মিলনমেলা

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ধ্বংস প্রায় দুবলহাটি রাজবাড়ি কয়েকদিনের জন্য মুখরিত। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১০টি দেশ থেকে আগত ৩১ জন শিল্পী, গবেষক ও সৃজনশীল কর্মী একত্রিত হন নওগাঁর দুবলহাটি রাজবাড়িতে। এখনে তারা তাদের স্ব স্ব কর্ম তুলে ধরেন। গেল বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া শিল্পকর্ম চলেছে ডিসেম্বরজুড়ে। উড়ন্ত শিল্পীগোষ্ঠীর আবাসিক শিল্পকর্ম বিনিময় কর্মসূচির অষ্টম ও নবম পর্বের কর্মকান্ডের প্রধান মিলনস্থল হিসেবে নির্ধারণ করা হয় ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ি। শিল্পীদের একটি ভিন্ন ধরনের সংগঠন ‘উড়ন্ত’। এ শিল্পীগোষ্ঠী শৈল্পিকভাষায় গল্পের রূপে সমসাময়িক নানা বাস্তবতাকে উপস্থাপন করে। উড়ন্ত আবাসিক শৈল্পিক-বিনিময় কর্মসূচি হচ্ছে উড়ন্ত শিল্পীগোষ্ঠীর প্রধান বাৎসরিক কার্যক্রম। যেখানে রাজধানী শহরের বাইরে অবস্থিত বাাংলাদেশের বিভিন্ন অজানা পুরাতন পরিত্যক্ত ঐতিহাসিক বাড়িকে কেন্দ্র করে এক নতুন ধরনের মঞ্চ উপস্থাপন করা হয়। এ সম্পদগুলোর সঙ্গে পুনরায় জনগোষ্ঠীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখে ‘উড়ন্ত’ এবং তাদের শিল্পীরা।

পুরনো বাড়িগুলোর পরিসীমায় বসবাসকারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সৃজনশীলতার এ কার্যক্রমে। ফলে তৈরি হয় এক নতুনধারা; যা পরবর্তীতে ওই অঞ্চলের মানুষকে আগ্রহী করে তোলে হারানো ইতিহাস খুঁজে বের করতে। নওগাঁর দুবলহাটি রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে একুশে পরিষদ আয়োজন করে আদিবাসী নৃত্য, দেশের গান, আধুনিক গান, সাধারণ নৃত্য। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পলাশ কুমার দাশ রচিত দুবলহাটি রাজবাড়ির ইতিকথা নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। অনুষ্ঠান দেখার জন্য রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ে। আলোচনা সভায় নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের উপদেষ্টা সজল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম এম রাসেল, উড়ন্তের নির্বাহী পারচিলক সাদিয়া মিজান ছিলেন। উড়ন্তের শিল্পীরা হলেনÑ আবিদ আসলাম (পাকিস্তানি), অর্ণব সাহা (বাংলাদেশ), বার্গিট্রা ভলজ (জার্মানি), চন্দ্রেয়ী দে (ভারত), ডেভিড তাগলিয়াবু (ইতালি), দীপক কুমার ইয়াদাভ (ভারত), এলডি গিগনার্ড (ফ্রান্স), ফৌজিয়া মাহিন চৌধূরী (বাংলাদেশ), হেলেনা আম্বেম্বে (সাউথ আফ্রিকা), জুয়েল চাকমা (বাংলাদেশ), কাজী তৌফিকুল ইসলাম (বাংলাদেশ), মনির মৃত্তিক (বাংলাদেশ), মিনিনকুলে নিয়েগই (সাউথ আফ্রিকা), মোহিত প্রিয়দর্শী (ভারত), মুহাম্মদ শাফায়েত হোসেইন (বাংলাদেশ), নবিল রহমান (বাংলাদেশ/ নিউইয়র্ক), নিশা রেচেল ফিলিপ (ভারত), রাকিয়া উইলিয়ামস (স্পেন), রঙ্গজীর রয় (ভারত), রুবি কর্মকার (ভারত), রুপানিথান পাক্কিয়ারাজা (শ্রীলঙ্কা), এস এম আসাদুজ্জামান রুপ (বাংলাদেশ), সর্বান চৌধুরী (ভারত), সারিয়া তাসনিম আহমেদ (বাংলাদেশ), সিমাঙ্গলিস (সাউথ আফ্রিকা), সৌনক দাস (বাংলাদেশ), সায়েদ মুহাম্মদ জাকির (বাংলাদেশ), তাইয়ারা ফারহানা তারেক (বাংলাদেশ), তানভীর আলিম (বাংলাদেশ), মুনা হোসেন (বাংলাদেশ), অমিয় রায় (বাংলাদেশ)। ২০১২ সালে থেকে নয়টি কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে উড়ন্তর হাত ধরে প্রায় ১০টি দেশের শতাধিক শিল্পী সৃজনশীল দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ১০টিরও বেশি পরিত্যক্ত ঐতিহাসিক স্থাপনা নিয়ে কাজ করে আসছেন।

সর্বশেষ খবর