শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পেরিলায় ভাগ্য বদলের হাতছানি

অল্প সময়ের ফসল পেরিলা চাষে অধিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। ভোজ্য তেলজাতীয় পেরিলা চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

পেরিলায় ভাগ্য বদলের হাতছানি

ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাণিজ্যিকভাবে উচ্চ গুণাগুণসম্পন্ন একটি ভোজ্য তেলজাতীয় ফসল পেরিলা। আর তেলজাতীয় পেরিলা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক চাহিদা। ফলন প্রায় সরিষার মতোই। খুব কম সময়ের ফসল পেরিলা চাষে অধিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। পেরিলা চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে এমনটাই জানালেন পেরিলা চাষি দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকনুজ্জামান। এবারই তিনি আশা করছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় পেরিলা রপ্তানি করার।

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় নাফানগর ইউনিয়নের বড় সুলতানপুরে ১২ একর জায়গায় লিজ নিয়ে তেল ফসল পেরিলা চাষ শুরু করেছেন সৈয়দ রোকনুজ্জামান। দেশের পেরিলা গবেষক মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম মজুমদারের কাছ থেকে ২০২১ সালে পেরিলা বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। তার পরামর্শেই পেরিলা চাষ শুরু করেন। সরিষা ভাঙানোর মিলগুলোতেই এই পেরিলা থেকে তেল করা যায়। গত বছর সরকারি হিসাবে প্রতি মণ পেরিলা বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকা। দীর্ঘ সময় গবেষণার পর ২০২০ সালে দেশের ১৪টি জেলায় সফলভাবে পেরিলার পরীক্ষামূলক চাষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে দেশের ৫০টিরও বেশি জেলায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয় পেরিলা।

উচ্চ গুণাগুণসম্পন্ন এই তেল আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি লিটার ২১০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
উচ্চ গুণাগুণসম্পন্ন এই তেল আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি লিটার ২১০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে নতুন এই তেলজাতীয় ফসলটি নিবন্ধন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। পেরিলা লেমিয়াসি (মিন্ট ক্রপ) পরিবারের একটি ফসল। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, নেপাল, ভিয়েতনাম এবং ভারতের কিছু অঞ্চলে চাষ হয়।

কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকনুজ্জামান বলেন, ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত আনুমানিক ব্যয় হয় প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা। কিন্তু এ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো পেরিলা বিক্রি করা সম্ভব। খুব কম সময়ের ফসল পেরিলা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

জানা যায়, পেরিলা তেলের শতকরা ৬৫ ভাগই ওমেগা, ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা হার্টের জন্য খুব উপকারী। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। চোখের জন্যও বেশ উপকারী। এর ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্যও উপকারী। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।

সর্বশেষ খবর