শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শিশুদের জীবন বাঁচাতে গ্রামে গ্রামে সবুজ বেষ্টনী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

শিশুদের জীবন বাঁচাতে গ্রামে গ্রামে সবুজ বেষ্টনী

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ। একটি নদী-খাল-পুকুরবেষ্টিত উপজেলা। এ উপজেলায় প্রায় প্রতি মাসে শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যায়। তাদের মৃতদেহ আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। চোখ ভিজে যায় কঠিন হৃদয়ের মানুষদেরও। বিষয়টি নাড়া দেয় ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরীকে। তিনি তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০২১ সালে উদ্যোগ নেন শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমাতে। ছুটে যান বিভিন্ন গ্রামে। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন। পুকুরপাড়ে সবুজ সবজি চাষ করতে কিংবা সবুজ নেট দিয়ে বেষ্টনী দিতে বলেন। এ প্রক্রিয়াটি কয়েকটি গ্রামে সাড়া ফেলে। মানুষ এগিয়ে আসে। কমে শিশু মৃত্যুহার। বিশেষ করে উপজেলার লৎসর ও দিশাবন্ধ গ্রামে মানুষ সবুজ বেষ্টনী পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। লৎসর গ্রামের নারী বিবি কুলসুম বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে পুকুর। সকালে রান্নায় ব্যস্ত থাকি। এ সময় সন্তানদের কাছে রাখতে পারি না। এ নিয়ে ভয়ে সময় কাটে। কখন কী হয়। ডাক্তাররা বলার পর পুকুরের পাড়ে নেট দিয়ে বেড়া দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে থাকতে পারি। দিশাবন্ধ গ্রামের আক্তার হোসেন বলেন, এ এলাকায় পুকুর বেশি। শিশুরাও বেশি পানিতে পড়ে। তাই পুকুরপাড়ে সবজি চাষ করেছি। এতে শিশুরা পুকুরপাড়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়। পানিতে পড়ে না। সঙ্গে সবজি দিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারছি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ২৫৮ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। গত ছয় মাসে দাউদকান্দিতে ২৩, মুরাদনগরে ৩৪ এবং দেবিদ্বারে ২১ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।

 

সর্বশেষ খবর