প্রচলিত কৃষির বাইরে মিশ্র ও আধুনিক পদ্ধতিতে বিদেশি জাতের বিভিন্ন ধরনের ফলফুল ও শাকসবজি চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ত্রিলোচানপুর গ্রামের সফল উদ্যোক্তা এস এম টিপু সুলতান। ২০১৬ সালে পরীক্ষামূলকভাবে তিন বিঘা জমিতে জারবেরা ফুল চাষ করে ভালো লাভ করেন তিনি। এরপর আরও বড় পরিসরে এক জায়গায় ২৬ বিঘা জমিতে এমএমএস অ্যাগ্রো ফার্ম করে বিদেশি জাতের ফুলের চাষাবাদ করছেন তিনি।
ফলনও পাচ্ছেন ভালো। এই ফুলফল ও শাকসবজির স্থানীয় পর্যায় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন। তাঁর এই খামারে জেলা ও জেলার বাইরের লোকজন প্রতিদিন দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন। তার সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন বিদেশি জাতের ফুলফল ও শাকসবজি চাষে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এই খামারে মাঠভর্তি বাগানে শোভা পাচ্ছে জারবেরা, বোতাম ফুল, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল। শুধু ফুল নয়। এখানে মিশ্র ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে বিদেশি জাতের কুল, পেয়ারা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি ও অসময়ের আম। খামারে একই জমিতে চাষ করছেন বিভিন্ন উন্নতজাতের ফুল ও ফলের চারাসহ শাকসজবিও। দৃষ্টিনন্দন খামারটিতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন। টিপু সুলতান বলেন, ‘১৯৯৮ সালে জীবিকার তাগিদে ঢাকাতে ১৮ বছর ধরে ফুলের ব্যবসা করেছি। এরপর নাড়ির টানে ২০১৬ সালে নিজ এলাকায় ফিরে এসে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করি।
ইউরোপের অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডে সেমিনারে ডাকা হয়েছে আমাকে। কিন্তু আমি একজন কৃষক হওয়ার কারণে আমাকে আগের সারিতে বসিয়ে সম্মান দেখানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ৮০% লোক কৃষির ওপর নির্ভরশীল। খামারে নিয়মিতভাবে ১৫ জন লোক কর্মরত। তাদের খরচ মিটিয়ে মাসে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, ‘টিপু সুলতান আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ফুল চাষাবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ফল বাগান করেছেন। তিনি কুল, ড্রাগন, পেয়ারা, আম, স্ট্রবেরি চাষাবাদ করে থাকেন এবং বাগানে মিশ্র ফসল হিসাবে বিভিন্ন প্রকার সবজি, পিঁয়াজ ও রসুন আবাদ করছেন।
তিনি সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর ফুল ও ফল বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাজারজাত করছেন। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁর যখন যা পরামর্শ দেওয়া দরকার তা সব সময় দিয়ে থাকি।