কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ইবাদ আলী ভাবতেন, কীভাবে বাড়ির ছাদে অধিক বিষমুক্ত সবজি, ফলের উৎপাদন করা যায়। ২০০৩ সালে ভর্তির সময় তিনি খাদ্য প্রকৌশল পছন্দ করেন। নিরলস গবেষণা, পরিশ্রমের ফসল তার শেকড় প্রযুক্তি। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। যশোর সদর উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকেন। নিজের বাড়ির ছাদে ১ হাজার ২০০ বর্গফুট জায়গায় চাষাবাদ করছেন। গত ১৫ মাসে মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকার সবজি, ফল, ফুল উৎপাদন করেছেন তিনি। যা তার পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভালো আয়ের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। ইবাদ আলীর এই শেকড় প্রযুক্তি ছাদকৃষিতে নতুন সংযোজন। তার দেখাদেখি যারা শেকড় প্রযুক্তি বেছে নিয়েছেন তারাই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলনের দেখা পেয়েছেন। এমন একজন খবির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আগে ছাদে ড্রামে, টবে, জিও ব্যাগে সবজির চাষ করতাম। এবার শেকড় প্রযুক্তিতে চাষ করে অনেক বেশি ফলন পেয়েছি।’ কীটনাশক ও পানির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এই শেকড় প্রযুক্তিতে। ইবাদ আলী পেশায় একজন সরকারি চাকরিজীবী। তার ছাদবাগান দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করেন। আগ্রহীরা শুধু সাধারণ দর্শনার্থীই নন, কৃষি বিশেষজ্ঞরাও আসছেন। যশোর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশারেফ হোসেন বাগানটি পরিদর্শন করে বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে ফলন অনেক বেশি, খরচও তুলনামূলকভাবে কম। ছাদ কৃষিতে শেকড় প্রযুক্তি ভালো। এটা করলে সাধারণত ছাদে যেভাবে কৃষি করা হয় তার চাইতে ফলন বেশি পাওয়া যাবে।’ ইবাদ আলী ২২ প্রজাতির সবজি ও ফলের চাষ করছেন। শুধু চাষই নয়, গাছের শেকড়ের বিন্যাস ও খাবার গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি নিয়মিত পরীক্ষানিরীক্ষাও করছেন। তার শেকড় প্রযুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য হলো, সবজি বা ফল যা-ই হোক, চাষের জন্য বেড ব্যবহার করা। এজন্য তিনি মেহগনি কাঠের বেড তৈরি করেছেন, যা টেকসই এবং তুলনামূলকভাবে খরচ কম। প্রতিটি বেড ছাদের ওপর একাধিক পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, ছাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো সংযোগ নেই। ফলে ছাদ নোংরা হয় না এবং জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয় না। সবজির জন্য প্রতিটি বেডের মাপ রাখা হয় ছয় ফুট বাই তিন ফুট, গভীরতা মাত্র চার ইঞ্চি। আর ফলের গাছের জন্য গভীরতা হয় প্রায় ১০ ইঞ্চি। প্রতিটি গাছে একটি মূল শেকড় থাকে যা গভীরে যায়। আর আশপাশে ছড়িয়ে থাকা পার্শ্বশেকড়গুলোই খাবার সংগ্রহের মূল দায়িত্ব পালন করে। তাই প্রশস্ত বেড দিলে শেকড়গুলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বেশি পরিমাণ পুষ্টি আহরণ করতে সক্ষম হয়। শেকড় প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, মাটির ব্যবহার খুব কম। ব্যয় কম, ছাদের ওপর ওজনের চাপ অনেক কমে যায় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ফলন হয় প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। এটি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি বলে জানান ইবাদ আলী। দেশের প্রতিটি ছাদ ও পতিত জমিকে শেকড় প্রযুক্তির চাষের আওতায় আনা তার স্বপ্ন। শেকড় প্রযুক্তির বিস্তারিত বিষয় নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছেন।
শিরোনাম
- আমেরিকা যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে: মাদুরো
- গাজায় হামাস ও ইউএনআরডব্লিউএ-এর কোনও ভূমিকা থাকবে না: রুবিও
- এশিয়া সফরে আসছেন ট্রাম্প, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আশা
- যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা নিয়ে সৌদি আরবের পরিকল্পনা ফাঁস!
- জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া
- থাইল্যান্ডের রানী মা সিরিকিত মারা গেছেন
- সাত দিনে ইউক্রেনের নতুন ১০ এলাকার দখল রাশিয়ার
- তুরস্ক উপকূলে নৌকাডুবিতে ১৪ অভিবাসীর মৃত্যু
- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয় বাংলাদেশের
- যাত্রাবাড়ীতে ছুরিকাঘাতে দুই স্কুলছাত্র আহত
- পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত ডা. মিজান
- ফরিদপুরে এ কে আজাদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
- মিরপুরে কমিউনিটি সেন্টারে আগুন
- শান্তির বিশ্ব গড়তে জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে : ড. ইউনূস
- লিবিয়ায় অভিবাসীরা নির্যাতন ও অপহরণের শিকার হচ্ছেন : আইওএম প্রধান
- নারায়ণগঞ্জে মুসল্লিদের ৬০ বছরের ভোগান্তির অবসানে ডিসির উদ্যোগ
- দেশের ভেতরে নাশকতায় শেখ হাসিনার পরিকল্পনা কাজ করছে : গয়েশ্বর
- ওমরাহ যাত্রীদের নতুন নিয়ম : রিটার্ন টিকিট ক্রয় বাধ্যতামূলক
- লাকসামে কারাতে বেল্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান
- ফাজিল পরীক্ষা শুরু শনিবার, অংশ নেবে ১ লাখ ১৭ হাজার শিক্ষার্থী
শেকড় প্রযুক্তিতে বাজিমাত
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
সর্বশেষ খবর
‘ইসলামোফোবিয়ার’ বিরুদ্ধে দাঁড়াতে নিজের মুসলিম পরিচয়ে দৃঢ় অবস্থান মামদানির
১১ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম
‘পরবর্তী নির্বাচনে নেতানিয়াহুকে প্রার্থী হিসেবে চায় না অধিকাংশ ইসরায়েলি’
১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম