বৃদ্ধাশ্রমটির নাম ‘নিরাপদ’। সন্তানদের কাছে ঠাঁই না পাওয়া একজন বৃদ্ধ বাবাকে জায়গা দিয়ে এটির যাত্রা। ২০৫ জন অবহেলিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সেবা মিলছে এখানে। এখন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন প্রায় ৪৫ জন অসহায় বৃদ্ধার ঠাঁই হয়েছে। এখানে নারী ও পুরুষের আলাদা দুটি ইউনিট রয়েছে। নারীদের ইউনিটে রয়েছে ২৮ জন এবং পুরুষের ইউনিটে রয়েছে প্রায় ১৭ জন। ‘নিরাপদ’ বিদ্ধাশ্রমটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ সরকারি কলেজ-সংলগ্ন (রুপালী কেশবা) এলাকায় ২০১৮ সালের ১৮ জুন প্রতিষ্ঠা হয়। এটি গড়ে ওঠে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা সরকার পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান সাজুর প্রচেষ্টায়। বৃদ্ধাশ্রমটি প্রায় ১০ শতাংশ জমির ওপর গড়ে তোলা হয়। এখানে যারা নিবাসী হয়েছেন তারা সবাই অতিদরিদ্র, সহায়সম্বলহীন এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। সন্তানরাও খোঁজ রাখেন না তাদের। পঞ্চাশোর্ধ্ব অসহায় এই মানুষরা থাকেন এই বৃদ্ধাশ্রমে।
এখানেই নিজের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন সুফিয়া বেওয়া। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী সন্তান কেউ নেই। আমাকে দেখারও কেউ নেই। তাই এখানে এসেছি। এখানে এসে ভালো আছি।’ রহিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছে। একটা ছেলে ছিল সড়ক দুর্ঘটনায় সে-ও মারা গেছে। তারপর থেকে এখানে আছি।’ বৃদ্ধাশ্রমে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বৃদ্ধাশ্রমে যারা রয়েছেন তাদের দেখাশোনা এবং রান্নার কাজ করি।’ বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সাজেদুর রহমান সাজু বলেন, ‘নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমটি ২০১৮ সালে চালু হয়। সবার সহযোগিতায় এটি চলছে। এখানে যারা আশ্রয় নেন তাদের থাকা, খাওয়া এবং চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। অনেকের সন্তান বা পরিবারের লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে না বুঝলেও পরে অনুশোচনা বোধ থেকে এখান থেকে তাদের বাবা-মাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যান। তখন আনন্দে মনটা ভরে ওঠে।’