বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত গান "আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে" গানে যেমন একটি চাঁদের কথা বলা হয়েছে, তেমনি রাতের আকাশে আমরা একটাই চাঁদ দেখতে পাই। কিন্তু এবার সেই ধারণা কিছুটা বদলাতে যাচ্ছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পৃথিবীর আকাশে নতুন একটি চাঁদ দেখা যাবে। যদিও এটি প্রকৃত চাঁদ নয়, বরং একটি ছোট গ্রহাণু, যার নাম ‘২০২৪ পিটি৫’। এটি ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে, তবে এটি খালি চোখে দেখা সম্ভব হবে না। এর জন্য প্রয়োজন হবে শক্তিশালী টেলিস্কোপ, যার ব্যাস অন্তত ৩০ ইঞ্চি।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ‘২০২৪ পিটি৫’ নামক এই ছোট গ্রহাণুটি মূলত অর্জুন গ্রহাণু বেল্ট থেকে আসছে। এই বেল্টটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করে। তবে এই গ্রহাণুটি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার পথে পৃথিবীর এত কাছাকাছি চলে আসবে যে, এটি পৃথিবীর আকাশে দ্বিতীয় চাঁদ হিসেবে দেখা যাবে। পৃথিবীকে অনুসরণ করে দুই মাসের জন্য এটি আকাশে থাকবে এবং তারপর আবার তার মূল বেল্টে ফিরে যাবে। এর ফলে ক্ষণিকের জন্য হলেও পৃথিবীর আকাশে নতুন এক চাঁদের সাক্ষাৎ পাবে মানুষ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্লোস মার্কোস জানিয়েছেন, এই নতুন চাঁদটি পৃথিবী থেকে সর্বনিম্ন ২৮ লাখ মাইল দূরত্বে আসতে পারে। এত কাছাকাছি আসার ফলে গ্রহাণুটি কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীর আকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে অস্থায়ী চাঁদ হিসেবে আবির্ভূত হবে। যদিও এটি পুরোপুরি পৃথিবীকে আবর্তন করবে না, বরং অনেকটা জানালায় উঁকি দেওয়ার মতো করে অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীর আকাশে থাকবে।
এই নতুন চাঁদকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘মিনি-মুন ইভেন্ট’ হিসেবে অভিহিত করছেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের গ্রহাণু স্বল্প সময়ের জন্য পৃথিবীর আকর্ষণে আবদ্ধ হতে পারে। মিনি-মুন হওয়ার জন্য গ্রহাণুকে পৃথিবীর কাছাকাছি প্রায় ২৮ লাখ মাইলের মধ্যে আসতে হয়। এই অবস্থায় গ্রহাণুটি কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীর চারপাশে আবর্তিত হতে শুরু করে, কিন্তু সম্পূর্ণ কক্ষপথ পূর্ণ না করে আবার ফিরে যায়।
আগামী নভেম্বরের পর নতুন এই ক্ষুদ্র চাঁদ আকাশ থেকে হারিয়ে যাবে, তবে এই দুই মাসের মধ্যে যারা শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে একে দেখতে সক্ষম হবেন, তারা এক অনন্য মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হবেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল