বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

রেকর্ডের হাতছানি দেশমের

রাশেদুর রহমান

রেকর্ডের হাতছানি দেশমের

বিশ্বকাপের ইতিহাসে কত তারকাই না ভক্তদের মন জয় করেছেন। দেশ ও জাতিকে গর্বিত করেছেন নানাভাবে। গত ৮৮ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে ফুটবলভক্তরা দেখেছেন অসংখ্য তারকাকে। যারা নিজেদের খ্যাতি নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। পেলে আর ম্যারাডোনাই কেবল নন, এই তালিকায় আছেন আরও অনেকে। পাওলো রোসি, রোনাল্ডো, রিভালদো, রোমারিও, জিনেদিন জিদান, বুফন আরও অনেকে। নাম গুনে শেষ করা যাবে না। তবে আকাশের তারকাদের মধ্যে চাঁদ তো একটাই থাকে। তেমনই এক চাঁদ জার্মানির ফ্র্যাঞ্জ বেকেনবাওয়ার।

১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ জেতে। সেবার তারা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জিতেছিল মূলত গার্ড মুলারদের মতো তারকার অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সেই। তবে মুলার ছিলেন সামনের সারিতে। এ কারণে তাকে লোকে দেখার সুযোগ পেয়েছে বেশি। মিডিয়াতে তিনি ছিলেন তারকা। কিন্তু জার্মানির সফলতার পেছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন বেকেনবাওয়ার। একজন ডিফেন্ডার হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন পুরোপুরি। এ কারণেই পশ্চিম জার্মানি পুরো টুর্নামেন্টে মাত্র ৪টি গোল হজম করেছিল সেবার। বিপরীতে গোল করেছিল ১৩টি!  অধিনায়ক হিসেবে পেছন থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েই বিশ্বকাপ জিতেছিলেন বেকেনবাওয়ার। এরপর কোচ হিসেবে তিনি বিশ্বকাপ জয় করেন ১৯৯০ সালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে। বেকেনবাওয়ারের এই অনন্য কৃতিত্ব নেই আর কারও। অবশ্য ব্রাজিলের মারিও জাগালো ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপজয়ী দলের সাধারণ সদস্য। এরপর ১৯৭০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেন তিনি। পেলের এক সময়কার সতীর্থ জাগালো ছিলেন ব্রাজিলের কোচ। কিন্তু অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব কেবল বেকেনবাওয়ারেরই আছে। এই গৌরব এবার অর্জন করতে পারেন ফ্রান্সের ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দিদিয়ের দেশম।

একজন মিডফিল্ডার হিসেবে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন দিদিয়ের দেশম। ওই বিশ্বকাপকে জিদানের বিশ্বকাপ বলে অনেকেই জানে। তবে দিদিয়ের দেশমের সুদৃঢ় নেতৃত্ব না থাকলে ফ্রান্সের জন্য কঠিনই হতো বিশ্বকাপ জেতা। সেই দিদিয়ের দেশম এখন ফরাসি দলের দায়িত্বে। আর ফ্রান্সও এবার বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিট। তরুণদের নিয়ে একটা দারুণ দল গড়ে তুলেছেন তিনি। পল পগবা, এমবাপ্পে, আঁতোয়ান গ্রিজম্যান, অলিভিয়ের গিরদ, দিমিত্রি পায়েতদের মতো তারকারা নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ফরাসিদের। এই দলটাকে এক বাক্যেই সবাই বিশ্বকাপের শীর্ষ ফেবারিট মেনে নিয়েছে ব্রাজিল, জার্মানি ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে। অবশ্য স্পেনও আছে এই তালিকায়। দিদিয়ের দেশম রেকর্ডটা গড়তেই পারেন! স্থান নিতে পারেন বেকেনবাওয়ারের পাশে।

এদিকে জোয়াকিম লো’র সামনেও রেকর্ডের হাতছানি। কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব আছে ইতালির ভিত্তরিও পোজ্জোর। তিনি ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালির কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী জার্মান কোচ লো’র সামনে সেই রেকর্ডে ভাগ বসানোর সুযোগ। এবারের বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা ভালোই হবে। কোন দলের চেয়ে কোন দলের শক্তি কম নয়। এর মধ্য থেকে নিজেদের সেরাটা যারা মাঠে ঢেলে দিতে পারবে, বিজয়ী হবে তারাই। দেখা যাক, রাশিয়া বিশ্বকাপে ভাগ্য খুলে কার! দিদিয়ের দেশমের নাকি জোয়াকিম লো’র। নাকি অন্য কারও!

সর্বশেষ খবর