শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

খেলতে পারাটাই বড় ব্যাপার

ক্রীড়া প্রতিবেদক

খেলতে পারাটাই বড় ব্যাপার

বায়ো-সিকিউর বাবল নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত খেলোয়াড়রা। বারবার করোনা টেস্ট করানো, নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে যেতে না পারাসহ মানতে হয় অনেক অনেক নিয়মনীতি। অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্রিকেটার তো এ বায়ো-বাবলের ভয়ে আপাতত ক্রিকেট থেকেই নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। তাদের মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথের মতো বড় তারকাও আছেন।

বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান মনে করেন, কষ্ট হলেও এমন পরিস্থিতিতে যে ক্রিকেট খেলতে পারছেন সেটাই অনেক বড় ব্যাপার।

জিম্বাবুয়ে সফরে লম্বা সময় বায়ো-সিকিউর বাবলে থাকার পর দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে দেখা না করেই সোজা হোটেলে ওঠেন টাইগাররা। অসিদের বিরুদ্ধে সফল সিরিজের পর বিরতি নিয়ে আবার বায়ো-বাবলে ঢুকে পড়েছেন ক্রিকেটাররা। তিন দিনের কোয়ারেন্টাইনের পর গতকাল প্রথম অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ।

করোনা মহামারীর সময় ঘরে বসে থাকলেও তো বন্দী অবস্থাতেই থাকতে হয়। তার চেয়ে একটুখানি কষ্ট করে যে ক্রিকেট খেলতে পারছেন, এতেই খুশি সোহান। গতকাল তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যে, এ পরিস্থিতিতে আমরা ক্রিকেট খেলতে পারছি, এটাই অনেক বড় ব্যাপার। সবাই মানিয়ে নিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সবশেষ দুটি সিরিজ বায়ো-বাবলে ছিলাম। তারপর একটা রিফ্রেশড হয়ে সবাই আবার আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্র্যাকটিসে এসেছে।’

অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজে হারানোর পর এবার সামনে নিউজিল্যান্ড। কিউইদের বিরুদ্ধেও ৫ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। এর আগেও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে একাধিকবার হোয়াইটওয়াশ করার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। কিন্তু সেটা পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে। টি-২০তে এখনো ব্লাক ক্যাপসদের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি টাইগাররা। অবশ্য পরিসংখ্যান কোনো বাধা নয়। কেন না আগের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছে বাংলাদেশ। টি-২০তে অসিদের বিরুদ্ধে আগে জয়ের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তারপরও ক্রিকেট পরাশক্তি দলটিকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছে বাংলাদেশ।

যদিও নিউজিল্যান্ড বলছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ থেকে শিক্ষা নিয়ে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েই বাংলাদেশে এসেছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের স্কোয়াডের দিকে দেখলেই বুঝতে বাকি থাকে না তারা আসলে এ সফর নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী!

কিছু দিন পরই সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-২০ বিশ্বকাপ। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে যাদের ওপর ভরসা করছে নিউজিল্যান্ড তাদের কাউকেই এ সফরে পাঠায়নি। এর পেছনে একটা বড় কারণ হতে পারে, অস্ট্রেলিয়ার পরিণতি দেখে নিউজিল্যান্ড আগেই হার মেনে বসে আছে। এ জন্যই নতুনদের পাঠিয়ে দিয়েছে। যাতে হারলেও দলের আত্মবিশ্বাসে কোনো চোট না লাগে।

বিশ্বকাপের আগে সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে এসে সিরিজ হারলে যে তাদের আত্মবিশ্বাসেই বড় চোট লাগবে। এ জন্যই তরুণদের দিয়ে পরীক্ষা করে দেখছে! 

তবে টি-২০ প্রধাণত তরুণদেরই খেলা। তাই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে বলে এ নিউজিল্যান্ডকে ছোট করে দেখার কোনো উপায় নেই। তা ছাড়া এ সফরে আসা নিউইজিল্যান্ডের ক্রিকেটার হামিশ বেনেট একদিন আগেই বলেছেন, কন্ডিশন কঠিন হলেও তারা সিরিজ জয়ের জন্যই বাংলাদেশে এসেছেন।

তবে বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর হচ্ছে, কন্ডিশন যেমন পক্ষে, তেমনি তরুণ ক্রিকেটাররাও দারুণ ফর্মে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর তাদের আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে। তা ছাড়া এ সময়ে সবচেয়ে বড় বাধা ‘বায়ো-সিকিউর বাবল’কেও এখন স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন টাইগাররা। সব মিলে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেই সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে ‘আত্মবিশ্বাসী’ বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ ১ সেপ্টেম্বর।

 

তিন দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ। বাংলাদেশে আসার পর গতকাল প্রথমবারের মতো অনুশীলনে নামেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা।

সর্বশেষ খবর