বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রাণ খুলে খেলুক বাংলাদেশ

হকির ইতিহাসে আজকের দিনটি বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবারের মতো খেলতে নামছে বাংলাদেশ। যারা লাল-সবুজের জার্সি পরে মাঠে নামবেন নিঃসন্দেহে তারা ভাগ্যবান। এশিয়ার সেরা ছয় দলই মূলত এ টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। আয়োজক হওয়ায় বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে সুযোগ পেয়েছে। গতকাল এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর্দা উঠেছে। এই আয়োজন বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কিছুই বলতে হয়। ১৯৮৫ ও ২০১৭ সালে ঢাকায় এশিয়াকাপ সফলভাবে আয়োজন হয়। আশা রাখি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরও সুন্দর পরিসমাপ্তি ঘটবে। একটা টুর্নামেন্টে কোনো দেশ বা দল যখন অংশ নেয় টার্গেট ধরেই মাঠে নামে।

সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে বাংলাদেশের টার্গেট কী? ঘরের মাঠে বড় কিছু অর্জন করতে পারবে কি? দেখেন আমি হকি খেলেছি ও জাতীয় দলকে নেতৃত্বও দিয়েছি, এখনো জড়িয়ে আছি, আমার প্রশিক্ষণে মেরিনার্স এবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাই যারা লড়বে তাদের সামর্থ্যটা আমার জানা আছে। আমি কেন যারা কম-বেশি  হকি বোঝে তারাও জানে ঘরের মাঠ হলেও বাংলাদেশ কতদূর যেতে পারে। আজই স্বপ্নের মিশন শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ফেবারিট ভারত। দেশটি অনেকদিন ধরে বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও এখনো বিশ্ব হকির অন্যতম শক্তিশালী।

র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা তিনে আর আমরা ৩৮ নম্বরে। সুতরাং আজকের ম্যাচে কি হবে তা নিশ্চয় বোঝাতে হবে না।

দেখেন দেশবাসীর মতো আমিও চাই ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ুক কিংবা ড্র হোক। যদি এমনটি হয় বিজয়ের মাসে হবে হকির বড় বিজয়। আবেগে অনেক কিছু বলা বা ভাবা যায়। বাস্তবতার কথা যদি বলি ভারতের জয়টা সময়ের ব্যাপার। যেখানে হারানোর কিছু নেই সেখানে তো ভয়ের কিছু নেই। আমি চাই নির্ভয়ে আশরাফুল ও জিমিরা ভারতের বিপক্ষে প্রাণ খুলে খেলুক। তবে বাংলাদেশ যদি বড় ব্যবধানে হার এড়াতে রক্ষণাত্মক খেলে, তাহলেই সর্বনাশ। জাপান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জিমিদের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে আমি হতাশ। শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক খেলেছে। ভারত এতটা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ গোল উৎসবে মাতলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেখানে ডিফেন্সশিপ খেলা মানেই ভারতকে গোল করার সুযোগ করে দেওয়া। একবার চিন্তা করুন আশরাফুলরা ডিফেন্সশিপ খেললে ভারত শুধু আক্রমণই চালাবে। এ অবস্থায় অনেক পেনাল্টি কর্নার হবে। তা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।

হারাবার যেখানে কিছু নেই সেখানে বাংলাদেশের অলআউট খেলা উচিত। স্ট্রিকে বল ধরে রাখলে ভারতও কিছুটা হলেও মানসিক চাপে থাকবে। খেলায় জয়-পরাজয় আছে। কিন্তু পরাজয়েও তৃপ্তি আছে। ১৯৮৫ সালে এশিয়াকাপে ঢাকায় পাকিস্তানের কাছে হারলেও এখনো সবাই বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করে। সেই ধরনের খেলাটাই খেলুক, সবার বাহবা পাবে জিমিরা।

সর্বশেষ খবর