বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নাগরিকত্ব পাওয়া ফুটবলার হচ্ছেন এলিটা কিংসলে। নাইজেরিয়ান এ ফুটবলার পেশাদার লিগে বিদেশি কোঠায় খেলছেন। বাংলাদেশি মেয়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর নিজে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। পেয়েও গেছেন।
এক্ষেত্রে তার ক্লাব বসুন্ধরা কিংস সব রকম সহযোগিতা করে। বাংলাদেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার পর কিংসলে বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে কিংসের পক্ষে অংশ নেন। ট্র্যাজেডি হলো বাংলাদেশ নাগরিক হওয়ার পর কিংসলের এখনো জাতীয় দলে অভিষেক হয়নি। এটা ঠিক এক্ষেত্রে ফিফার বেশ কিছু নিয়ম কানুন আছে। কথা হচ্ছে বাফুফে এ ব্যাপারে কতটা তৎপরতা দেখিয়েছে। জাতীয় দলের বড্ড দুর্দিন চলছে। হার যেন তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এমন বিপর্যয়ে কিংসলেকে যদি জাতীয় দলে পাওয়া যেত তাহলে দল কি শক্তিশালী হতো না?
এবার বাংলাদেশের লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে চান ঘরোয়া আসরে মাঠ কাঁপানো দুই বিদেশি ফুটবলার- ব্রাজিলের রবসন রবিনহো ও মালির সুলেমান দিয়াবাতে। রবসন দুই মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসে খেলে প্রমাণ করেছেন তিনি কতটা উঁচুমানের ফুটবলার। অনেকের মতে বাংলাদেশে এমন মানসম্পন্ন বিদেশির আর কখনো দেখা মেলেনি। ফুটবলভক্তদের সুখবর হচ্ছে এ রবসনই বাংলাদেশে জাতীয় দলে খেলতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। লিগ টেবিলে থাকা মোহামেডানের অবস্থান সন্তোষজনক না হলেও কয়েক বছর ধরে সুলেমান দিয়াবাতে দারুণ খেলছেন। এবার লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।
সামাজিক যোগাযোগ ছাড়া এ দুই বিদেশি ফুটবলার বিভিন্ন মিডিয়াতেও তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘রবসন তাকে এ ব্যাপারে কিছুই বলেনি। তবে ওর আগ্রহের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। এক্ষেত্রে বড় শর্ত হচ্ছে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। রবসন যদি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চান আমাদের পক্ষে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার তা করব। কিংসলের অবস্থা দেখছেন না নাগরিকত্ব পাওয়ার পরও জাতীয় দলে খেলার অনুমতি পাচ্ছে না। মূল কাজ তো করতে হবে ফুটবল ফেডারেশনকে।’ মোহামেডানের পরিচালক ও ফুটবল সেক্রেটারি আবু হাসান প্রিন্স বলেন, ‘দিয়াবাতে নাগরিকত্ব চাইলে অবশ্যই সহযোগিতা করব। রবসন কিংবা দিয়াবাতে জাতীয় দলে খেলতে পারলে দেশেরই লাভ। এখানে বাফুফের দায়িত্ব অনেক।’
রবসন ও দিয়াবাতের আগ্রহের কথা বাফুফের কর্মকর্তাদেরও নিশ্চয় কানে এসেছে। তারা তো এত বড় সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন। প্রয়োজনে সভাপতি দুজনকে ডেকে কথাও বলতে পারেন। তৎপর হলে ফিফার যত কঠিন শর্ত হোক না কেন তা সহজ করা সম্ভব। ৮০’র দশকে পাকির আলীও বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ দেখান। নালজেগারও চেয়েছিলেন। বাফুফের নীরবতায় তা ভেস্তে গেছে। হাঙ্গেরির বিখ্যাত ফুটবলার পুসকাস নাগরিকত্ব নিয়ে স্পেনে খেলেছেন। আর্জেন্টিনার আল ফ্রেডো ডি স্টেফ্যানো খেলেন স্পেনে। তাহলে বাংলাদেশ কেন পারে না?