রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

উদ্বোধনী ম্যাচ নিয়ে উচ্ছ্বসিত কাতার

কাতার এখন ফুটবলময়

উদ্বোধনী ম্যাচ নিয়ে উচ্ছ্বসিত কাতার

মঞ্চ প্রস্তুত। বিশ্ব ফুটবলের ৩২টি সেরা দল চলে এসেছে কাতারে। লাখ লাখ দর্শক এখন দোহা, আল রাইয়্যান, আল খোর, আল ওয়াকরাহ শহর এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন। অনেকে আছেন সৌদি আরব, ওমান এবং আরব আমিরাতে। নিজের দলের ম্যাচের দিন তারা আসবে কাতারে। সবাই প্রস্তুত বিশ্বকাপের জন্য। অপেক্ষা কেবল ইতালিয়ান রেফারি ড্যানিয়েল ওরসাটোর বাঁশি বাজানোর। তিনিই আজ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কাতার-ইকুয়েডর লড়াই শুরু করবেন বাঁশি বাজিয়ে।

কাতার দারুণ দুটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে আজ। মধ্য প্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জন করতে যাচ্ছে তারা। একই সঙ্গে বিশ্বকাপে অভিষেকও হচ্ছে তাদের। বিরল এক রেকর্ডেরই মালিক হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। একদিনে দুটি ইতিহাস লিখতে যাচ্ছে তারা। ঐতিহাসিক এই ম্যাচ ঘিরে কাতারের প্রস্তুতিও খুবই ভালো। কাতারের বিখ্যাত ক্লাব আল সাদের ১৩ জন ফুটবলার আছে কাতার জাতীয় দলে। এদের বেশিরভাগই খেলেন প্রথম একাদশে। সারা বছর একসঙ্গে খেলে আগে থেকেই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা দারুণ। এবার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া দলটা।

কাতার যে বিশ্বকাপে খেলার উপযুক্ত তার প্রমাণ তারা দিয়েছে ২০১৯ সালে এশিয়ান কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এবার বিশ্বকাপেও দারুণ কিছু করে দেখাতে চায় কাতার। গতকাল বিশ্বকাপের আগে সংবাদ সম্মেলনে দলটির কোচ ফেলিক্স সানচেজ বলেন, ‘আমরা নিজেদের সেরা প্রস্তুতিটাই নিয়েছি। তবে প্রতিপক্ষের প্রতিও আমাদের সম্মান আছে। তারা বেশ ভালো দল। আশা করি ম্যাচে আমরা ভালো ফল নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারব।’ খেলার মধ্যেই ছিল কাতারের ফুটবলাররা। এছাড়াও বিশ্বকাপ উপলক্ষে তারা বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। ইকুয়েডরের কোচ গুস্তাভো আলফারোও প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মানের চোখেই তাকাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘কাতার নিজেদের মাটিতে খেলবে। তারা সমর্থন পাবে। এসবই সত্যি। তবে আমরা নিজেদের খেলাটা খেলতে চাই। নিজেদের ওপর আস্থা রাখতে চাই।’ তবে ইকুয়েডর এর আগে তিনবার বিশ্বকাপ খেলেছে ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলের কঠিন বাধা পেরিয়ে। এর মধ্যে একবার খেলেছে শেষ ষোলোতেও। অন্যদিকে কাতার বিশ্বকাপের নবীন সদস্য। অভিজ্ঞতা বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে দুই দলের মধ্যে। অবশ্য ইকুয়েডরের বিপক্ষে কাতারের সাম্প্রতিক রেকর্ডটা দারুণ। ২০১৮ সালে এক প্রীতি ম্যাচে ইকুয়েডরকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে কাতার। রোমাঞ্চকর সেই জয়ের সুখস্মৃতিটা আজ সঙ্গেই থাকছে বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের। আল খোরের আল বাইত স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শক একসঙ্গে খেলা দেখতে পারবেন। আজ এই দর্শকদের বেশিরভাগই সমর্থন দিবেন কাতারকে। বিশ্বকাপের এই ম্যাচে দর্শকদের সমর্থন বড় ভূমিকাই রাখতে পারে।

কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। স্টেডিয়ামের ভিতরে এলকোহল নিষিদ্ধ হওয়ার পর ইউরোপিয়ানরা বেশ ক্ষুব্ধ। কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের যোগ্য দেশ হিসেবেই ভাবছে না তারা। তবে ফিফা সভাপতি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সাফ বলে দিয়েছেন, সব দেশ নিয়েই বিতর্ক আছে। রাশিয়া নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। সবার দাবি মেনে নিলে বিশ্বকাপের আয়োজকই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাছাড়া সবাইকে আয়নায় নিজের চেহারাটাও দেখতে বলেছেন তিনি।

সব বিতর্ককে পেছনে ফেলে আজ মাঠে গড়াচ্ছে বিশ্বকাপ। কাতার-ইকুয়েডরের লড়াই দিয়ে শুরু হলেও দর্শকদের মূল আকর্ষণের তালিকায় থাকছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি। সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে। কাদের হাতে উঠবে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি? উত্তর জানার জন্য অপেক্ষা খুব বেশি দিনের নয়!

সর্বশেষ খবর