দ্বি-স্তর প্রস্তাবের বিপক্ষে স্বয়ং ভারতেও চলছে সমালোচনার ঝড়। বিশেষ করে মিডিয়াগুলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে লোভী বা স্বৈরাচার বলেও চিহ্নিত করছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রাচীনতম দৈনিক আনন্দবাজার উল্লেখ করেছে ভারত এখন নানা টোপ দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে শোষণ করতে চাচ্ছে। যেভাবে বোর্ড সভাপতি শ্রীনিবাসন আইসিসি সদস্যদের ক্ষেপিয়ে তুলেছেন তাতে সামনে কাউকে কাছে পাবে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে এশিয়ার তিন দেশ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সঙ্গে যে ক্রিকেট সখ্য গড়ে উঠেছিল তা বিলীন হওয়ার পথে। পত্রিকায় বলা হয়েছে, আইসিসির পূর্ণ সদস্য তালিকায় এশিয়া মহাদেশের চারটি দেশ রয়েছে। যা ছিল ভারতের জন্য বড় শক্তি। বাংলাদেশ বরাবরই ভারতকে সমর্থন দিয়ে আসছে। ক্রিকেটে ভারতের কোনো প্রস্তাবে না করেনি। অথচ আজগুবি দ্বি-স্তরের প্রস্তাব এনে তাদেরও দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ভারত জানে টেস্টে কন্টিনেন্টাল কাপ চালু করলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। অথচ জেনেশুনে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আনন্দবাজার বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশকে হুমকি দেওয়াতে। গতকাল আইসিসি সভা শুরুর আগে ভারত জেনে যায় বাংলাদেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে থাকবে। তাই নাজমুল হাসান পাপনের কাছে সমর্থন চাইতে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করেন আইপিএল কর্মকর্তা সঞ্জয় প্যাটেল। তার কথায় পাপন রাজি না হওয়াতে স্কাইপে শ্রীনিবাসনকে ডেকে আনা হয়। উল্লেখ্য, মায়ের মৃত্যুতে ভারতীয় বোর্ড সভাপতি দুবাইতে উপস্থিত হতে পারেননি। তাই বিসিবি সভাপতি যেন শ্রীনিবাসনের কথা শোনেন এ জন্য স্কাইপে আনা হয়। পাপন এখানেও প্রস্তাবের বিরোধিতা করলে শ্রীনিবাসন উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনারা রাজি না হলে আমরা এ বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপ খেলব না। দেখি এরপর আপনারা কী করে দুটো আসরের আয়োজন করেন। এ রকম চাপেই মূলত ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও নিউজিল্যান্ড ভারতের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
জিম্বাবুয়ের কর্মকর্তা পিটার চিঙ্গোকা স্বীকারও করেন, জানি ব্ল্যাক মেইলিংয়ের শিকার হতে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু করার নেই। আমাদের বোর্ডে টাকা দরকার, তাই ভারতের প্রস্তাবে রাজি হতে বাধ্য হয়েছি। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে অনেক প্রলোভন দেখিয়ে দলে টানতে পারেননি শ্রীনিবাসন। আনন্দবাজার উল্লেখ করেছে, পরিস্থিতি বুঝেই ভারত আর বৈঠকে টেস্ট ক্রিকেটে রেলিগেশনের প্রস্তাব তুলতে পারেনি। তাই এ সমালোচিত প্রস্তাবটি মুলতবি রাখা হয়েছে। শ্রীনিবাসন হয় তো ভাবছেন ছয় দেশ যখন আছে তখন আরেক দেশকেও দলে ভেড়ানো যাবে। কিন্তু শ্রীনিবাসন কি একবার ভেবে দেখেছেন লোভ দেখিয়ে যা আদায় করা যায় তা স্থায়ী নয়। এখন নিজেদের সুবিধার কথা ভেবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ভারতের সঙ্গে আছে। কিন্তু তারা যে মুখোশ পাল্টাবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে। শোষণ করতে গিয়ে ভারতও একদিন ক্রিকেটে শোষিত তালিকায় পড়ে যাবে। তখন যদি কাউকে পাশে না পায় কি অবস্থা হবে শ্রীনিবাসন কি ভেবে দেখেছেন।