সালভাদরের ফন্তে নোভা এরিনাতে আজ ব্রাজিলিয়ানরা সমর্থন দিবে কাদের? ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে নাকি তারায় তারায় সেজে বিশ্বকাপের মঞ্চে আসা জার্মানিকে? পর্তুগালের সঙ্গে ব্রাজিলের নাড়ির সম্পর্ক। অনেক ব্রাজিলিয়ানেরই পূর্ব পুরুষ পর্তুগিজ। সমর্থনের ক্ষেত্রে এটা বড় একটা মানদণ্ড হতে পারে। তবে আজ ব্রাজিলিয়ানদের সাত-পাঁচ ভাবার কোনো প্রয়োজনই নেই। মিরোস্লাভ ক্লোসার পা থেকে রোনাল্ডোর রেকর্ডটা অক্ষত রাখার জন্য সমর্থনটা পর্তুগালের প্রতিই থাকবে ব্রাজিলিয়ানদের। বিশ্বকাপের মঞ্চে সর্বোচ্চ গোলের (১৫ গোল) রেকর্ড ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনাল্ডোর। ১৪ গোল নিয়ে ঠিক পরের স্থানে থাকা মিরোস্লাভ ক্লোসা তো আজই রেকর্ডটা নিজের করে নিতে পারেন! নিদেনপক্ষে রোনাল্ডোর পাশে স্থান করে নিতে পারেন! আরও একটা ক্ল্যাসিক ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় আছে ফুটবল ভক্তরা। জার্মানি-পর্তুগাল। যদিও অতীত বলছে, ৭৮ বছর পুরনো লড়াইয়ে জার্মানদেরই জয় জয়কার। তারপরও একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কত কিছুই না বদলে দিতে পারেন। ১৭ বারের সাক্ষাতে জার্মানদের জয় ৯ বার। পর্তুগালের ঝুলিতে জয়ের সংখ্যা ৩টি। বাকি পাঁচটি ড্র। রোনালদো যুগে ইউরোপের দুই পুরনো শত্রু তিনবার মুখোমুখি হয়েছে। ২০০৬ বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৩-১ গোলে হেরেছিল রোনালদোর পর্তুগাল। ২০০৮ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং ২০১২ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে দেখা হয়েছিল দুই দলের। দুইবারই জিতেছে জার্মানি (৩-২ ও ১-০)। অতীতের এই ব্যরিয়ারটা ছিন্ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রোনালদো। রিয়াল মাদ্রিদে সতীর্থ জার্মান মিডফিল্ডার সামি খেদিরাকে পর্তুগিজ তারকা রোনালদো বলেছেন, 'এবার আমরা জার্মান ভূতটা তাড়াবই।' রোনালদোর এই প্রতিজ্ঞায় মুচকি হেসেছেন সামি খেদিরা। রোনালদোর মতো তারকা এটা পারেন বটে। যদিও জার্মানরা খুব একটা ভাবছে না রোনালদোকে নিয়ে। অন্তত প্রকাশে তেমনটাই বলছে তারা। পোডোলস্কি বলছেন, 'আমরা রোনালদোর বিপক্ষে নয়, পর্তুগালের বিপক্ষে খেলতে নামব।' জার্মানরা প্রকাশ্যে যাই বলুক, আড়ালে-আবডালে রোনালদোকে নিয়ে নিশ্চয়ই পরিকল্পনা করছে।
যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই রোনালদোর অবস্থা কি? শুক্রবার অনুশীলনে আঘাত পেয়েছেন গোড়ালিতে। আগে থেকেই ফিটনেস সমস্যা ভুগছিলেন রোনালদো। তবে গতকাল আবারও অনুশীলন করেছেন উইলিয়াম কারভালহো এবং এডুয়ার্ডোর সঙ্গে। দুজনেই বলেছেন, রোনালদো জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচে থাকছেন। কিন্তু ফিজিওর কাছ থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট না পেলে কোচ পাওলো বেন্টো হয়ত নিজের সেরা অস্ত্রকে জার্মানির বিপক্ষে বিশ্রামেই রাখবেন। জার্মানির বিপক্ষে রোনালদোর উপস্থিতি-অনুপস্থিতি দুটোই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সমস্যামুক্ত নয় জার্মানিও। সামি খেদিরা রিয়াল মাদ্রিদে প্রায় পুরো মৌসুমই কাটিয়েছেন বেঞ্চে বসে। গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ার ভুগছেন কাঁধের ব্যথায়। পোডোলস্কি আঘাত পেয়েছেন গোড়ালিতে। সবমিলিয়ে কোচ জোয়াকিম লো আজ পূর্ণ শক্তির জার্মান দল মাঠে নামাতে পারছেন না। দুই দলেই ইনজুরি আঘাত হেনেছে। এই আঘাত কাটিয়ে যারা মাঠের লড়াইয়ে নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করতে পারবেন, তারাই জয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়বেন। রোনালদোদের বিপক্ষে অবশ্য দুর্জেয় অতীত দাঁড়িয়ে আছে। জার্মানদের বিপক্ষে পর্তুগিজদের সর্বশেষ জয় ২০০০ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে।