শুধু ভারত নয়, ক্রিকেটবিশ্বের ভবিষ্যৎ তারকা বলা হয় বিরাট কোহলিকে। গত তিন-চার বছর যে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, তাতে এমন ভাবা অস্বাভাবিক নয়। রানের পর রান, সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করতে দেখে অনেকে বলাবলিও করেছেন, শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে দেবেন কোহলি। অনেকে আবার মাহেন্দ্র সিং ধোনির উত্তরসূরিও ভাবছেন তাকে। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ টেস্ট ম্যাচ সিরিজে খুঁজেই পাওয়া যায়নি এই ভারতীয় তারকাকে। মাইক্রোস্কোপ দিয়ে বিশ্লেষণ করতে হচ্ছে তার পারফরম্যান্স। অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সে যখন বিপর্যস্ত কোহলি, তখন আবার মিডিয়া সরব হয়ে উঠেছে বান্ধবী আনুশকা শর্মাকে নিয়ে। শুধু মিডিয়াই নয়, দলীয় ক্রিকেটার, কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে যথেষ্ট সরব।
দলের ব্যাটিং লাইনের অন্যতম ভরসা কোহলি যখন রান করতে পারছিলেন না, জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডদের সুইং, গতি ও বাউন্সে নাকাল হচ্ছিলেন, তখন তাকে মানসিকভাবে উদ্দীপ্ত করতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অবিশ্বাস্য এক সিদ্ধান্ত নেয়। তার সঙ্গে হোটেল রুমে সময় দেওয়ার অনুমতি দেয় বান্ধবী আনুশকাকে। সেই অনুমতি নিয়ে আনুশকা দীর্ঘ সময় কোহলির সঙ্গে রাতযাপন করেন। যা ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনায় তোলপাড় পুরো ভারত। বান্ধবীকে পেয়েও উজ্জীবিত হতে পারেননি কোহলি। ৫ টেস্টের ১০ ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ১৩৪! আনুশকার রাত কাটানোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব সঞ্জিব প্যাটেল এই অনুমতি দেন। তার ধারণা ছিল, এতে করে কোহলি মানসিক চাপকে ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়াবেন এবং রান করবেন। কিন্তু কিছুই হয়নি অদ্ভুত টোটকায়! বরং সিরিজে তার চেয়ে ভালো গড় পেসার মোহাম্মদ শামির। আনুশকাকে নিয়ে এর আগেও সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু সেসব মাথায় নেননি কোহলি। নিউজিল্যান্ডে আনুশকা তার সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন। তখন সেঞ্চুরিও করেছেন। ফলে সমালোচনা তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি করেনি। কিন্তু এবার ইংল্যান্ড সফরে রান করতে না পারায় সমালোচনাগুলো তীক্ষ্ন হয়ে ফলার মতো বিঁধছে কোহলির গায়ে।
আনুশকাকে থাকার অনুমতি দেওয়ার বিষয় মানতে পারেননি দলের অন্য ক্রিকেটাররা। যদিও মুখে কিছু বলছেন না তারা। কিন্তু আচার আচরণে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। দলের ম্যানেজার সুনীল দেবও ক্ষিপ্ত এমন ঘটনায়, 'কোহলি ও আনুশকা বিবাহিত নন। যদি দলের অন্য ক্রিকেটাররা এমন করেন, তখন কী হবে?'
কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে নেননি দলের ম্যানেজার সুনীল দেব। তার যুক্তিটা পরিষ্কার। কোহলি আর আনুশকা বিবাহিত নন। এখন দলের বাকিরাও যদি কোহলির দৃষ্টান্ত সামনে তুলে ধরে দাবি করে তাদেরও প্রেমিকাসহ থাকতে দিতে হবে, তখন কী হবে?
ইংল্যান্ডে লর্ডস টেস্ট জেতার পরও ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে ভারত। তার ওপর শেষ দুটি টেস্ট হারে তিন দিনের মধ্যে এবং ইনিংস ব্যবধানে। তাই ভীষণ বিরক্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ওয়ানডে সিরিজের আগে রবি শাস্ত্রীকে পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। দায়িত্ব নিয়েই শাস্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দলের প্রয়োজনে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার চেয়েও বড় বিষয়, কোহলি-আনুশকা ঘটনায় ভবিষ্যতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের স্ত্রী নিয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে ক্রিকেট বোর্ড।