ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালি দিন এখন আর নেই। জমা স্মৃতির ভাগাড়ে। বর্তমান ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সত্তর ও আশির দশকের ছায়াই বলা যায়! হয়তো ক্রিস গেইল, শিবনারায়ণ চন্দরপলদের মতো ক্রিকেটার খেলেন, কিন্তু তারকা দ্যুতিতে তারা কি স্যার গ্যারি সোবার্স, স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস, ব্রায়ান লারাদের সমতুল্য? পক্ষে-বিপক্ষে উত্তরকে সঙ্গী করেই কাল অসাধারণ এক রেকর্ড গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩৭ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে ৫০০তম টেস্ট খেলল উত্তাল আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জটি। ভিভ রিচার্ডসের দেশের সঙ্গে রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিল বাংলাদেশও। সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটের বোশেজর স্টেডিয়ামে মাত্র ৮৫ টেস্ট খেলা দেশটির বিপক্ষে খেলল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঐতিহাসিক টেস্টটিকে আবার স্মরণীয় করে রাখেন দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট ও লিওন জনসন। দুজন বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের নাম সোনালি হরফে লিখে নেন। দুজনের রেকর্ড শত রানের জুটিতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২ উইকেটে ১৪৫ রান সংগ্রহ করে বড় স্কোরের পথে এগোচ্ছে স্বাগতিকরা।
নিজেদের ফিরে পাওয়ার টেস্টে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে টাইগাররা। একাদশ সাজায় তিন পেসার দিয়ে। কিন্তু ব্র্যাথওয়েইট-জনসন জুটি টাইগারদের বোলিংকে নখদন্তহীন করে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ব্র্যাথওয়েইটকে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিন বছর পর খেলতে নামা শফিউল ইসলাম। অভিষিক্ত ওপেনার জনসনকে ব্যক্তিগত ৬৬ রানে আউট করেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
কিংসটাউন টেস্টে ২১২ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন ব্র্যাথওয়েইট, যা তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ও প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। উদ্বোধনী জুটিতে ক্রিস গেইলকে সঙ্গী করে ১১৬ রান যোগ করেছিলেন ব্র্যাথওয়েইট। ৩৯.১ ওভারের জুটিতে গেইলের স্কোর ছিল ৬৪। ব্যক্তিগত কাজে সেন্ট লুসিয়া টেস্ট খেলছেন না গেইল। তার জায়গায় সুযোগ পান জনসন। ২৭ বছর বয়সী গায়ানার বাঁ হাতি ওপেনার সুযোগ পেয়েই কাজে লাগান। সিনিয়র ব্র্যাথওয়েইটকে সঙ্গী করে দেশের ঐতিহাসিক ৫০০তম টেস্টটি স্মরণীয় করে রাখেন রেকর্ড জুটি গড়ে। দুজনে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৯.৫ ওভারে ১৪৩ রান যোগ করেন। সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো শত রানের জুটি গড়েন দুজনে। ১০ বছর আগে ২০০৪ সালে ড্র টেস্টটির দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছিলেন গেইল ও ডেভন স্মিথ। গেইল অপরাজিত ছিলেন ৬৬ রানে এবং স্মিথ ৪০ রানে।
টাইগারদের বিপক্ষে ১২ নম্বর টেস্ট খেলছে ক্যারিবীয়রা। এখন পর্যন্ত পাঁচটি শত রানের উদ্বোধনী জুটি রয়েছে ক্যারিবীয়দের। ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৩১ রানের জুটি গড়েছিলেন গেইল-ওয়াভেল হাইন্ডস। এত দিন এটাই ছিল উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান। গেইল ৫১ ও হাইন্ডস করেছিলেন ৭৫ রান ওই জুটিতে। গত টেস্টে ১১৬ রান করেন গেইল-ব্র্যাথওয়েইট জুটি। ২০০৪ সালে ১১৩ রানের অপরাজিত জুটি গড়েছিলেন গেইল-স্মিথ। ২০১১ সালে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ১০০ রান করেছিলেন ব্র্যাথওয়েইট-কিয়েরন পাওয়েল জুটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচটি শত রানের তিনটিতে রয়েছেন গেইল ও ব্র্যাথওয়েইট।