বিশ্বকাপ শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। ফাইনাল ২৯ মার্চ। সময়ের হিসেবে ৪৫ দিন। যদি কোনো দল ক্রিকেট মহাযজ্ঞের ফাইনাল খেলে, তাহলে দেড় মাস দেশের বাইরে থাকতে হবে দলটিকে। প্রস্তুতির জন্য যদি আরও আগে যায়, সেটা বেড়ে আড়াই মাস হতেও পারে। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেললে, মাশরাফিদের দেশের বাইরে থাকতে হবে ৭৫ দিন! এই দীর্ঘ সময় যাতে ক্রিকেটাররা 'হোম সিক'-এ না ভোগেন, সেজন্য স্ত্রী-পরিবারকে সঙ্গে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম।
বিশ্বকাপ মিশনে অংশ নিতে আজ রাতে ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আসরে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি। ক্যানবেরার ওই ম্যাচে মাশরাফিদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ক্রিকেট মহাযজ্ঞে দল যাতে সাফল্য পায়, সেজন্য আসর শুরুর প্রায় ২২ দিন আগে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে ক্রিকেট দল। ২৬ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টাইগাররা দুই সপ্তাহের কন্ডিশনিং ক্যাম্প করবে ব্রিসবেনে। ক্যাম্প করার মূল উদ্দেশ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। ক্যাম্প চলাকালীন অবশ্য ১ ও ৩ ফেব্রুয়ারি দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে। এছাড়া ৯ ও ১২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি অফিশিয়াল ম্যাচও খেলবে ক্রিকেট দল। সব মিলিয়ে আড়াই মাস দেশের বাইরে অবস্থান করতে হবে ক্রিকেটারদের। এত দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকতে হয়নি ক্রিকেটারদের আর কখনোই।
দীর্ঘ আড়াই মাস দেশের বাইরে পরিবার-পরিজনদের ছাড়া থাকতে হোম সিকনেস হওয়াই স্বাভাবিক। পরিচালনা পর্ষদের গত সভায় ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ চলাকালীন যাতে হোম সিক অনুভব না করেন, সেজন্য স্ত্রী-সন্তানদের নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে করেই ক্রিকেটাররা তাদের পরিবার নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কাল টিম ম্যানেজার ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, 'দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থাকবে ক্রিকেটাররা। এটা আমাদের মাথায় রয়েছে। ক্রিকেটাররা যাতে পরিবার পরিজনের কথা ভেবে কোনো রকম হোম সিক অনুভব না করেন, সেজন্য বোর্ড তাদের পরিবার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।' এখন কথা হচ্ছে, কবে থেকে ক্রিকেটাররা পরিবারকে সঙ্গে পাবেন? এ বিষয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, 'মেলবোর্ন ম্যাচের আগে বা পরে পরিবারদের নেওয়ার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা।' মেলবোর্নে বাংলাদেশের খেলা ২৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।' পরিবার নেওয়ার সুযোগ পেলেও সব খরচ নিজেকে বহন করতে হবে বলে জানা গেছে।
ক্রিকেটারদের মধ্যে পরিবার নিতে পারেন চার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। পরিবার নিচ্ছেন না অধিনায়ক মাশরাফি। বোর্ডের এ সিদ্ধান্তকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। সমালোচনা করেছেন অনেকে। অনেকের মতে, ভারত, পাকিস্তান ক্রিকেট দল তো পরিবার-পরিজন ছাড়াই বিশ্বকাপ খেলবে। তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সমস্যা কোথায়?