এখনো সেই আগের মতোই দেখতে। লম্বা এক হারা গড়ন। শুধু বয়সের একটু ছাপ পড়েছে চোখে মুখে। টম মুডি; অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এক সময়কার অপরিহার্য ক্রিকেটার এখন ধারাভাষ্যকার। ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তবে সেখানেও বেশিদিন থাকেননি। কোমড়ের ব্যথায় সরে দাঁড়ান কোচিং থেকে। ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য খুব কাছ এবার দেখেছেন বাংলাদেশের খেলা। দেখেছেন মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের পারফরম্যারম্যান্স। বিস্মিত না হলেও মুডি সন্তুষ্ট টাইগারদের খেলায়। আগামী ১৯ মার্চ মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল। ওই ম্যাচে ভারতকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে বাংলাদেশ, বলে জানান মুডি।
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ওটাই একমাত্র খেলা। শ্রীলঙ্কার কোচ থাকাকালীন কমবেশি খোঁজ রেখেছেন বাংলাদেশের। কিন্তু সে সময় বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এমন ধারাবাহিক ছিল না। এবারের বাংলাদেশকে দেখে মুগ্ধ ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা মুডি, 'প্রতিটি ম্যাচেই বাংলাদেশ ভালো খেলছে। অনেক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের খেলা দেখে আমার মনে হয়েছে, ক্রিকেটাররা ভালো করার জন্য সব সময় মুখিয়ে আছেন। এটা খুব ভালো দিক।' কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে টাইগারদের। স্বপ্নকে আরও সুদূরে নিয়ে যেতে এখন নক আউট পর্বে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। টানা ছয় জয়ে ভারতও এখন ফুরফুরে মেজাজে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়েই সুপার এইট খেলেছিল বাংলাদেশ। পরের আসরে ঘরের মাঠে খেলে হারলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নকআউট পর্বে বিদায় নিতে পারে যে কোনো দল। সেই ভয়েই যেন কুঁকড়ে গেছে ভারতীয়রা। নক আউট পর্বের ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেই মনে করেন মুডি, 'ভারত অন্যতম ফেবারিট। তাদের ব্যাটিং বিভাগ শক্তিশালী। তারা ভালোও খেলছে। অবশ্য বাংলাদেশও ভালো খেলছে। আমি মনে করি, ম্যাচটি সহজ হবে না ভারতের। কঠিন সমস্যায় পড়তে হবে ভারতকে।'
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এসেছিল কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে। অ্যাডিলেড ওভালে ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে সেই স্বপ্ন পূরণ করে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারানো ছিল সহজ টার্গেট। বাকি তিন টেস্ট খেলুড়ে দেশের যে কোনো একটিকে হারানোর টার্গেট ছিল টাইগারদের।
মাহামুদুল্লাহ'র সেঞ্চুরিতে সেই কাজটি সুচারুভাবে করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেন মাহামুদুল্লাহ। পরশু সেডন পার্কে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন। মাহামুদুল্লাহ'র ব্যাটিং দেখে মুগ্ধতা ঝরেছে মুডির কণ্ঠে, 'পরিস্থিতি বুঝে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন । তার সবচেয়ে বড় গুণ, সে খুব ঠাণ্ডা মেজাজের। এটা খুব ভালো। টেকনিক খারাপ নয়। পেশাদার ক্রিকেটে সাফল্য পেতে ভালো করার ক্ষুধা থাকতে হবে। আশা করি রান করার ক্ষুধাটা থাকবে মাহামুদুল্লাহ'র।'