ফ্রন্ট ফুট আর ব্যাক ফুটে দাঁড়িয়ে চমৎকার সব শট নিচ্ছেন বিশ্বকাপের সেরা বোলার সাউদি-বোল্টের বিপক্ষে। মুগ্ধ দর্শক ক্রিকেটের মহান সব কিংবদন্তী। একে-অপরকে বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন করছেন, ওই ছেলেটাকে দেখেছ, কেমন অবলীলায় রান করে চলেছে! রিচার্ড হ্যাডলি আর জন বুকাননের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তীদের প্রসংশা পাওয়া কি চাট্টিখানি কথা! টানা দুটো সেঞ্চুরির (১০৩ ও ১২৮*) পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এখন প্রসংশার সাগরে অবগাহন করছেন। অ্যাডিলেডের রুক্ষ্ন আবহাওয়া আর হ্যামিল্টনের হাড় হিম করা ঠান্ডা বাতাসও তাকে লক্ষ্যচূ্যত করতে পারেনি। বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের মিশন সফলতার মধ্য দিয়েই শেষ করেছে টাইগাররা। ৬ ম্যাচে ৩ জয় আর এক বৃষ্টিবিঘি্নত টাইয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে কাঙ্খিত গন্তব্য কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে মাশরাফিবাহিনী। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বিশালতায় অপেক্ষা করছে ধোনিদের দূরন্ত ভারত। কে পথ দেখাবে দলকে? আবারও কি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ? নাকি শেষ আটের লড়াইয়ে দেখা মিলবে কোনো নতুন নায়কের? এর উত্তর না হয় ভবিষ্যতের হাতেই তোলা রইল। গ্রুপ পর্বে যা হলো, তা নিঃসন্দেহে সম্ভাব্য সুন্দরের সর্বোচ্চ প্রকাশ। ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের মতোন আক্রমণাত্বক ও গতিশীল দুটো বোলিং লাইনের বিপক্ষে সম্পূর্ণ ভিন্ন কন্ডিশনে টানা দুটো সেঞ্চুরি রিয়াদের। এরও আগে আছে ৬২, ২৮ আর ২৩ রানের তিনটে ইনিংস। সবমিলিয়ে ৫ ইনিংসে ৩৪৪ রান। বিশ্বকাপে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় পঞ্চম। সাঙ্গাকারা এবি ডি ভিলিয়ার্স আর দিলশানরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় উপরে থাকবেন এতো জানা কথা। কিন্তু মাহমুদুল্লাহর কথা কে ভেবেছিল! যার অফ ফর্ম দলের স্থানটাই নড়বড়ে করে দিয়েছিল! তাকে দলে রাখায় অনেকেরই নাক উঁচু হয়ে গিয়েছিল। অথচ সেই রিয়াদই এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য যে সুপ্ত বাসনা ছিল রিয়াদের তার প্রকাশ এরচেয়ে সুন্দর হতে পারতো না। তিনি কেবল বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিয়ানই নন, এখন ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে কোটি কোটি ভক্তের স্বপ্ন সারথিও।