বাংলাদেশ ফুটবলের এক সময়কার আলোচিত দল রহমতগঞ্জ এফসি। আবাহনী, মোহামেডান, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, বিজেএমসির সঙ্গে সমোচ্চারিত হতো পুরনো ঢাকার দলটির নাম। ঢাকার ফুটবলে এখনো টিকে আছে দলটি। তবে টিম টিম করে। খেলছে বাংলাদেশ পেশাদার লিগে। কিন্তু সত্তর, আশির দশকের মতো সেই ঝাঁজ নেই। তারপরও পুরনো ঢাকার প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিবছরই ভালো দল গড়ার চেষ্টা করে। এবারও করেছে 'মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-২০১৫'তে। শক্তিশালী দল গঠন করে লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই আটকে দিয়েছে চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে। কাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম খেলায় আবাহনীর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে রহমতগঞ্জ। অবশ্য দুই দুইবার এগিয়ে ছিল আকাশী-হলুদ জার্সিধারীরা। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ২-১ গোলে হারায় ফেনী সকারকে।
আগের সাত পেশাদার লিগের চারটিরই চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। তার উপর প্রথম তিন শিরোপা জিতে হ্যাটট্রিকের স্বাদও রয়েছে দলটির। গত আসরে রানার্স আপ। কাল দাপটের সঙ্গেই খেলছিল। তারপরও প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি ম্যাচে। আবার চার গোলের তিনটিই হয়েছে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে। তবে ১০ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো আবাহনী। কিন্তু হাঙ্গেরীয়ান স্ট্রাইকার জাবলস সোরবা ঠিকানা খুঁজে পাননি। ৩৪ মিনিটে আরও একবার গোল মিস করেন নাসির। অবশ্য এবার গোল রক্ষা করেন রহমতগঞ্জের রক্ষণভাগের একজন। প্রথমার্ধে উল্লেখ করার মতো আক্রমণ ছিল এ দুটিই।
দ্বিতীয়ার্ধে তেড়ে ফুরে খেলতে শুরু করে আবাহনী। ৫৭ মিনিটে এগিয়েও যায়। প্রথমার্ধে নিশ্চিত গোল মিস করা সোরবা এগিয়ে নেন দলকে। দেমজেনের থ্রুতে কাটব্যাক করেন নাসির। ফাঁকায় দাঁড়ানো হাঙ্গেরীয়ান স্ট্রাইকার সোরবা বল ধরে ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়ে নেন দলকে (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার উৎসব শেষ হওয়ার আগেই আনে পুরনো ঢাকার দলটি। ৫৮ মিনিটে রহমতগঞ্জকে ম্যাচে ফেরান নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড গিদিমন সোলেমন (১-১)। সমতা আসার পর জমে উঠে ম্যাচ। তবে গোছানো ফুটবল খেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরমধ্যে ৭২ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আবাহনী। শাহেদের লম্বা বল ধরে ক্রস করেন নাসির। নাসিরের ক্রসে হেডে আকাশী-হলুদদের এগিয়ে নেন গ্যাবর দেমজেন (২-১)। তিন মিনিট পর আরও একটি গোল পেতে পারতো আবাহনী। কিন্তু রহমতগঞ্জের গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় গোল পায়নি বর্তমান রানার্স আপরা। খেলা যখন শেষের দিকে এগোচ্ছিল এবং জয়োৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিল আবাহনী, তখনই সমতা ফেরায় রহমতগঞ্জ। স্তব্ধ হয়ে পরে আবাহনীর সাজঘর। ৯০ মিনিটে শওকত রাসেলের ক্রসে তরুণ মান্নাফ রাবি্ব চমৎকার প্লেসিংয়ে ২-২ করেন স্কোরলাইন।
মুক্তিযোদ্ধাকে ১২ মিনিটে এগিয়ে নেন জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার এনামুল। ৪৫ মিনিটে মানিকের আত্দঘাতী গোলে আরও পিছিয়ে যায় ফেনী। ৪৯ মিনিটে আরও একটি আত্দঘাতী গোল হয়। গোলটি করেন মুক্তিযোদ্ধার বিপ্লব।