মাঠ ছেড়ে যখন বেরোচ্ছিলেন সালমা খাতুন, তখন ধানমন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অনেকেই অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দিকে! তারা ভাবতেই পারছিলেন না কিছুক্ষণ আগে এই মেয়েটিই ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন। খেলেছেন ১৫০ রানের হার না মানা ইনিংস! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। কাল মহিলা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে অবিশ্বাস্য ইনিংসটিই খেলেন সালমা। সালমার বিধ্বংসী ইনিংসের ম্যাচটি আবার তার দল মোহামেডান ৩১৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ওরিয়েন্ট স্পোর্টিংকে। একই দিন রূপালী ব্যাংক ১৪০ রানে হারিয়েছে আনসার ও ভিডিপিকে।
প্রিমিয়ার ক্রিকেট মাঠে গড়ানোকে যেমন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ইতিবাচক মানছেন, একইভাবে সমালোচনার তীক্ষ্ন বাণেও জর্জরিত করছেন। কাল লিগের উদ্বোধন করেন বিসিবি সভাপতির স্ত্রী। কোন পদাধিকারবলে তিনি মহিলা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের উদ্বোধন করেন, তার কোনো যুক্তি নেই বিসিবির কাছে। যদিও বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন সুজন জানিয়েছেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেছেন।
আবাহনী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কাল মোহামেডান রানের পাহাড় গড়ে। অধিনায়ক সালমা খাতুন ও ইতি মণ্ডলের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪০ ওভারে ২ উইকেটে ৩৪৯ রান করে মোহামেডান। ইতি ১২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ১২২ বলে ১৫ চারে। সালমা ১৫০ রানের ইনিংস খেলেন মাত্র ৮৬ বলে। যাতে ছিল ২৬টি বাউন্ডারি। মজার বিষয় হচ্ছে, মোহামেডানের ইনিংসে ছিল না কোনো ওভার বাউন্ডারি। সব মিলিয়ে বাউন্ডারি ছিল ৪৬টি। ৩৫০ রানের আকাশসম টার্গেটে খেলতে নেমে তালগোল হারিয়ে ফেলে ওরিয়েন্ট। মোহামেডানের নিয়ন্ত্রিত বোলিং আক্রমণে মাত্র ৩৩ রান করে পুরনো ঢাকার দলটি। দলের কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ১৩ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। ১১ ক্রিকেটারের মিলিত রান মাত্র ২০! বিকেএসপি ৪ নম্বর মাঠে রূপালী ব্যাংক ৪০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৪ রান করে। দলের পক্ষে লতা মণ্ডল সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন ৭৮ বলে। ২১৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে আনসার ও ভিডিপির ইনিংস থেমে যায় ৭৪ রানে। সর্বোচ্চ ২৩ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। এরপর ২২ রান করেন ওপেনার আয়েশা আক্তার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডন: ৪০ ওভারে ৩৪৯/২ (সালমা ১৫০*, ইতি মন্ডল ১২৪*, রাবিয়া ২১, সাবরিনা ১/৪১, জেরিন ১/৪৩)।
ওরিয়েন্ট: ২০.১ ওভারে ৩৩/৯ (দোলা ৫, ফাল্গুনি ৪, জেরিন ৩, আরিফা ৩, রুমানা ৩/৪, তাহেরা ২/৯, সালমা ১/২, আশা ১/৬)।
ফলাফল : মোহামেডান ৩১৬ রানে জয়ী