যখনই চায়ের আড্ডায় উঠে আসে বিশ্বকাপ ক্রিকেট, তখনই আলোচনার কেন্দ্রে থাকে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। আলোচনায় উঠে আসেন দুই আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও আলিমদার। ক্রিকেট মহাযজ্ঞের কোয়ার্টার ফাইনালে দুই আম্পায়ার এতটাই পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন, ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালি ধিক্কার জানিয়েছে দুজনকে। ভারতের সঙ্গেও ক্রিকেটীয় সম্পর্কের অবনতিও হয়েছে। এমনটি অবশ্য চাইছে না দুই বোর্ড। বিসিবি ও বিসিসিআই চাচ্ছে সম্পর্কের উন্নতি। আগের মতো সৌহার্দ্যপূর্ণ। এ জন্য আগামী মে মাসে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসতে চাইছে ভারত। অথচ বাইলেটারাল সিরিজটি শুধু ওয়ানডে হওয়ার কথা ছিল।
গত জুনে ওয়ানডে সিরিজ খেলে গেছে ভারত। যদিও সফরে ভারতের দ্বিতীয় সারির দল এসেছিল। এবার পূর্ণ শক্তির দল পাঠাবে ভারত। সফরে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও একটি টি-২০ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলেছে ভারত সর্বশেষ ২০১০ সালে। এরপর অবশ্য এশিয়া কাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছে ভারত।
গত জুনে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ হলেও একটি বাতিল হয়েছিল বৃষ্টিতে। বাকি দুটি লড়াই করলেও জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা। তবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশ এখন ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত শক্তি। ইংল্যান্ডের মতো প্রতিষ্ঠিত শক্তিতে টপকে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন মাশরাফিরা। সেই কোয়ার্টার ফাইনালেই আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ে হেরে মাঠ ছাড়েন মাশরাফিরা। ওই ম্যাচে তিন-তিনটি বাজে সিদ্ধান্ত ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। রোহিত শর্মার আউট বলটিকে বিমার বলকে নো ডাকেন গোল্ড। মাশরাফির বলে সুরেশ রায়নার পরিষ্কার লেগ বিফোর এড়িয়ে যান আম্পায়ার। সর্বশেষ মাহমুদুল্লাহর ছক্কাকে ক্যাচের নির্দেশ দেন আম্পায়ার। ওই তিন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি বাঙালি। এ ছাড়া বিশ্বকাপ ফাইনালে ট্রফি দেওয়া নিয়ে আইসিসির চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসনের সঙ্গে মন কষাকষি হয় বিসিবির সাবেক সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে। গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ট্রফি দেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি। বিধিসঙ্গত না হওয়ায় আইসিসির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান মুস্তফা কামাল। শ্রীনিবাসন তার প্রভাব খাটিয়ে ভারতের বাংলাদেশ সফর বাতিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি জগমোহন ডালমিয়ার দৃঢ়তায় সেটা পারেননি। উল্টো ডালমিয়া পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বিসিবিকে। বিসিবিও সম্মতি দিয়েছে। এখন কাজ করছে আইটিনারি প্রস্তুত করতে। তিন ওয়ানডের সবগুলোই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে হবে। দুই টেস্টের একটি মিরপুর এবং বাকিটি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এবং টি-২০ ম্যাচ হবে মিরপুরে।
পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার কথা থাকলেও বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী এ বিষযে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক চানান, বিসিবির পরবর্তী সভায় সফর নিয়ে আলোচনা হবে। এরপরই চূড়ান্ত হবে ভারতের বাংলাদেশ সফর।