সংবাদ সম্মেলনে ক্লান্তির কথা বলেননি। কিন্তু বের হয়েই বললেন, 'ভাই শরীরের উপর ভীষণ ধকল গেছে। যদি রাজীব ভাই থাকত, তাহলে খুব ভালো হতো।' ভুল বলেননি মোহাম্মদ শহীদ। উইকেটের সামান্য ঘাসকে সহায়ক করে একা যেভাবে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্ব্বাস তুলেছেন। তার সঙ্গে বাড়তি আরও দুজন পেসার থাকলে দিনের চিত্রটা হয়তো অন্যরকম হতো! শহীদের ফায়ার বোলিং ব্যাটসম্যানদের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল সত্যি। কিন্তু পাকিস্তানকে খুব বিপদে ফেলতে পারেনি। তবে আরও একজন পেসার থাকলে ভালো হতো বলেই মনে করেন শহীদ।
মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম জানিয়েছিলেন, তিন পেসার খেলানোর কথা। কিন্তু কাল ইউ টার্ন দিয়ে দুই পেসার দিয়ে সাজানো হয় একাদশ। তার উপর খেলানো হয় আনফিট শাহাদাত হোসেন রাজিবকে। এই সিদ্ধান্ত যে কত বড় ভুল, সেটা ম্যাচের প্রথম ওভারেই বুঝেছে মুশফিকবাহিনী। আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন শাহাদাত। এরপর সারা দিন প্রায় একাই বোলিং করেন শহীদ। অবশ্য অকেশনাল পেসার সৌম্য সরকার চেষ্টা করেছেন কিছুটা সহায়তা করতে। কিন্তু মিডিয়াম গতির বোলিং কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি ইউনুস খান ও আজহার আলির ওপর। তৃতীয় একজন পেসার থাকলে ঘাসের উইকেটে অনেক বেশি সুবিধা থাকত বলেন ২১ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া শহীদ, 'একজন তৃতীয় সিমার থাকলে অবশ্যই ভালো হতো। কেননা উইকেটে ঘাস ছিল। বল মুভ করছিল। আর আমিও বেশ সুবিধা পাচ্ছিলাম।'
খুলনায় অভিষেক। কিন্তু আলো ছড়াতে পারেনি। কাল সামান্য ঘাসের সুবিধা পেয়েই যেন খুনে বোলার হয়ে উঠেন। শুরুতে ৮ ওভারের স্পেলে নাভিশ্বাস তুলে ফেলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। অসাধারণ এক আউট সুইঙ্গারে সাজঘরে পাঠান আগের টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজকে। এরপর সেঞ্চুরিয়ান আজহারকেও আউট করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য সঙ্গী হওয়ায় পাননি। সেই হতাশা অবশ্য কাটান আরেক সেঞ্চুরিয়ান ইউনুসকে সাজঘরে পাঠিয়ে। দুই পাকিস্তানি কাল টাইগারদের বোলিংয়ের মুখে দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে রেকর্ড ২৫০ রানের জুটি গড়েন। তাই টাইগার বোলারদের জন্য দিনটি ছিল চ্যালেঞ্জের। পাঁচ স্পেলে বোলিং করে ক্লান্ত শহীদ স্পষ্টভাবেই বলেছেন চ্যালেঞ্জের কথা, 'অবশ্য চাপ পড়েছে। রাজীব ভাই থাকলে ভালো হতো। উইকেটে ঘাস রয়েছে। এমন উইকেটে বোলিং করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং।' খুলনায় কোণঠাসা হয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন নিয়েই আজ মাঠে নামবে টাইগাররা। আর ব্যাটসম্যানরাও উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে ভালো করবেন বলেই বিশ্বাস শহীদের। এখন শুধু বাস্তবায়ন।