ঢাকায় সিঙ্গাপুরের স্মরণীয় দিনই বলা যায়। বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেনে গতকাল শিরোপা জিতেন সিঙ্গাপুরের মারদান মামত। বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রীতি ফুটবল ম্যাচে ২-১ গোলে বাংলাদেশকে পরাজিত করেছে সিঙ্গাপুরই। সামনে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লড়বে। ১১ জুন কিরঘিস্তান ও ১৬ জুন জর্ডানের বিপক্ষে ঢাকায় দুটো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বাছাইপর্বে মিশনে নামার আগে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স যাচাই করতে প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যবস্থা করা হয়। জয় নয়, সিঙ্গাপুরের কাছে হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। পেশাদার লিগের দ্বিতীয় পর্ব শেষ হওয়ার পরই ক্রুইফ শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়েন। কিন্তু প্রস্তুতি যে ভালো হচ্ছে না তা বুঝা গেল ম্যাচ হেরে। ম্যাচে নামার আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সফরকারী দলের অধিনায়ক মো. শাহরীন বিন ইশহাক বলেছিলেন, হোম ভেন্যুতে অবশ্যই বাংলাদেশ ফেবারিট। তারপরও আমরা কৌশল খাটিয়ে খেলব এবং জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ব আশা রাখি।
তারই কথা সত্যি হয়েছে পিছিয়ে থেকেও তারা জয় পেয়েছে। মাত্র চার মিনিটের মাথায় বাংলাদেশ যখন গোল করল মনে হচ্ছিল ক্রুইফের শিষ্যরা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে। অধিনায়ক মামুনুলের কর্নার থেকে নাসির হেডে জালে বল পাঠান। আশ্চর্য এ গোলের পরই বাংলাদেশ যেন চুপসে যায়। আক্রমণ চালালেও তাতে পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। কোচ ক্রুইফ বারবার বলছেন, ফুটবলারদের ফিটনেসের ঘাটতি রয়েছে। ৯০ মিনিটে লড়াইয়ে দম হারিয়ে ফেলছে তারা। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষেও এ দৃশ্য দেখা গেল। এগিয়ে গিয়েও ম্যাচ ধরে রাখার সেই মানসিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি মামুনুলদের মধ্যে। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সমতায় ফিরে সিঙ্গাপুর। আবু ক্রশ করলে পোষ্টে হেড নেন হানিফ। কিন্তু তা বার পোস্টে লেগে ফেরত বল তারই পায়ে আসে। এবার আর জাল চিনতে ভুল করেননি। সমতা ফিরিয়ে আনেন তিনি। এ গোলই উজ্জীবিত করে তুলে সিঙ্গাপুরকে। আক্রমণের পর আক্রমণ। এ সময় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বেশ ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। বলা যায়, ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় সফরকারীরা। ৭৩ মিনিটে ডি বক্সে বাইরে থেকে চমৎকার শটে পিছিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে এগিয়ে দেন কামাল। তার এই গোলে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা।
অথচ বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা একটু সতর্ক থাকলেই দুটো গোল রক্ষা করা যেত। কোচ ক্রুইফ দলের গতি আনতে একাধিক খেলোয়াড় পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। অবশ্য ম্যাচ হারের পর মামুনুল বলেছেন, হারলেও আমরা উপকৃত হয়েছি। সামনে ভুল-ত্রুটি শুধরিয়ে ভালো খেলতে পারব। ২ জুন সাবেক সাফ চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ পরবর্তী প্রীতিম্যাচ খেলবে। যদিও এশিয়ান গেমসে তাদের বিপক্ষে জয় পাওয়া গেছে। কিন্তু বর্তমানে মামুনুল, এমিলিদের পারফরম্যান্স তাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কতটা সুবিধা করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।