বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ শেষ হয়ে গেল। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে সেপ্টেম্বরে মামুনুলরা পরবর্তী ম্যাচ খেলবেন অস্ট্রেলিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে। তাই আপাতত জাতীয় দলের ক্যাম্প স্থগিত রাখা হয়েছে। ফুটবলাররা এখন মান্যবর প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় পর্বে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ২০ জুন থেকে এ লিগ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ জুন। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার লিগের লড়াই তুঙ্গে। প্রথমপর্বে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে সমানসংখ্যক ম্যাচে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, ঢাকা মোহামেডান ও ব্রাদার্স ইউনিয়ন ২০ পয়েন্ট অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। তবে গোল পার্থক্যে মোহামেডান দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
শক্তির বিচার করলে শেখ রাসেল ও শেখ জামালের মধ্যে শিরোপার লড়াই হওয়ার কথা। দুটি দলে রয়েছে দেশ পরিচিত ফুটবলার। মানসম্পন্ন বিদেশিও উড়িয়ে এনেছে তারা। লিগে কোনো দলই অপরাজিত নেই। ঢাকা লিগে প্রথম পর্বে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত লিগ জিততে পারেনি এমন রেকর্ড কম নয়। তাই শেখ জামাল ৩ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও শিরোপা শেষ পর্যন্ত কার ঘরে যাবে বলা মুশকিল।
শক্তির বিচারে এ লড়াইয়ে শেখ জামাল বা শেখ রাসেলকেই এগিয়ে রাখা যায়। কিন্তু মোহামেডান ও ব্রাদার্সও খারাপ খেলছে না। পেশাদার লিগে আবাহনী ৪, শেখ জামাল ২, শেখ রাসেল একবার করে শিরোপা জিতলেও মোহামেডানের ভাগ্য জুটেনি। তবে তরুণদের নিয়ে সাদা-কালোরা এবার যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করছে তা সত্যিই প্রশংসা করার মতো। ব্রাদার্সও অনেকদিন পর ভালো খেলছে। মুক্তিযোদ্ধাও কম যাচ্ছে না। তবে ঢাকা আবাহনী বেশ পিছিয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় পর্বে শক্তি বাড়িয়ে দলগুলো মাঠে নামবে। প্রথমপর্বে শেখ রাসেল বেশ কিছু পয়েন্ট নষ্ট করেছে যা ছিল অপ্রত্যাশিত। বিশেষ করে দুর্বল দুই প্রতিপক্ষ ফরাশগঞ্জ ও রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ড্র মেনে নিতে পারেননি সমর্থকরা। সহজ সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে। তারকাভরা দল হলেও কেমন জানি খাপ ছাড়া পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। তাই দ্রাগান দুগানোভিচের বদলে দ্বিতীয় পর্বে প্রশিক্ষণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে মারুফুল হক মারুফের কাছে। ২০১২-১৩ মৌসুমে তারই প্রশিক্ষণে শেখ রাসেল তিনটি ট্রফি ঘরে তুলে। শুধু কোচ নয়, নতুন বিদেশি ফুটবলারও সংগ্রহ করা হয়েছে। ক্যামেরুনের এলেঙ্গা ও বসনিয়ার ডামির ইনিস যোগ দিয়েছেন রাসেলের ক্যাম্পে। লিগ জিততে শেখ রাসেল দ্বিতীয় পর্বে মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে।
অন্যদিকে শীর্ষ স্থান ধরে রাখতে শেখ জামাল চেয়েছিল দ্বিতীয় পর্বে তাদের পুরনো খেলোয়াড় সনি নর্দেকে মাঠে নামাতে। কিন্তু মোহনবাগান অনুমতি না দেওয়ায় সনির ঢাকা আসা হচ্ছে না। নতুন কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন জোসেফ আফুসি। আফুসি গতবারও জামালের প্রশিক্ষক ছিলেন। মোহামেডান আর ব্রাদার্সও চাইবে দ্বিতীয় পর্বে আরো জ্বলে উঠতে। আবাহনী পিছিয়ে থাকলেও দলের কোচ জর্জ কোটান বলেছেন, এখনো শিরোপা জেতা সম্ভব। তবে দ্বিতীয় পর্বে খেলোয়াড়দের শতভাগ উজার করে খেলতে হবে। দ্বিতীয়পর্ব মানেই ফাইনাল রাউন্ড। শিরোপা জিততে দলগুলো চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবে না। তাই আশা করা যায় দর্শকরা দ্বিতীয়পর্বে প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করবেন।