শক্তির বিচারে পেশাদার ফুটবল লিগে শিরোপা লড়াই শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের মধ্যে হওয়ার কথা। দুদলই দেশসেরা ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়েছে। কিন্তু শেখ রাসেল এবার খেলোয়াড়দের যে সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবিশ্বাস্যই বলা যায়। আট বছর আগে দেশে পেশাদার লিগের আবির্ভাব ঘটলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক দলই পেশাদারিত্বে নিয়ম কানুন মানছে না। কিন্তু দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ রাসেলের চেহারা পাল্টে গেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর শেখ রাসেলের চেয়ারম্যান হওয়ায় ক্লাব নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। গত মৌসুমে ট্রফিহীন থাকলেও এবার শেখ রাসেল বিগ বাজেটে দেশের তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে শক্তিশালী দল গড়ে। বিদেশি কালেকশনও ছিল চোখে পড়ার মতো। খেলোয়াড়রাও স্বীকার করেছেন এ ধরনের সুযোগ সুবিধা ক্যারিয়ারে তারা কখনো পাননি। সাবেক ফুটবলাররা বলছেন, শেখ রাসেলের খেলোয়াড়রা যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন তা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য বড় প্রাপ্তিই বলা যায়। এতে করে ভালো খেলার ব্যাপারে খেলোয়াড়রা উৎসাহ পাবে।
এ অবস্থায় একটা ক্লাবের শিরোপা জেতাটা কঠিন কিছু নয়। কিন্তু প্রথম পর্বে শেখ রাসেল ততটা ছন্দময় খেলা খেলতে পারেনি। নিশ্চিত জয় হাত ছাড়া হয়েছে সহজ সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করাতে। প্রথম পর্বে ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছিলেন এমিলি-মিঠুনরা। অন্যদিকে শেখ জামাল ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ছিল। এরপর আবার মোহামেডান ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের অ্যাকাউন্টেও ২০ পয়েন্ট জমা রাখে। এতে ধারণা করা হচ্ছিল শিরোপা লড়াই হবে চারমুখী। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে শিরোপা লড়াইয়ে শেখ রাসেল ও শেখ জামালের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। দ্বিতীয় পর্বে শেখ জামাল ড্র করে রহমতগঞ্জের সঙ্গে। এতে শেখ রাসেল শিরোপা লড়াইয়ে দারুণভাবে ফিরে এসেছে। শেখ জামাল ১৩ ম্যাচে ৩০ আর শেখ রাসেল এক ম্যাচে কম খেলে ২৬ পয়েন্ট পেয়েছে। সে হিসেবে দুদলের পার্থক্য মাত্র ১ পয়েন্ট। ১৩ ম্যাচে মোহামেডানও ২৬ পয়েন্ট পেয়েছে। কিন্তু শেখ রাসেলের কাছে বুধবার হারার ফলে ১৩ পয়েন্ট নষ্ট করেছে। অন্যদিকে শেখ রাসেল ১০ ও জামাল নষ্ট করেছে ৯ পয়েন্ট। মাত্র ১ পয়েন্ট পার্থক্য কখনো ভয়ের কারণ হতে পারে না।
তাছাড়া দ্বিতীয় পর্বে শেখ রাসেলে বেশকিছু পরিবর্তন এসেছে। দ্রাগান দুকানোভিচের পরিবর্তে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মারুফুল হক মারুফকে। নতুন বিদেশিও উড়িয়ে আনা হয়েছে। এই পরিবর্তনে দল যে উজ্জীবিত তা প্রমাণ মিলেছে দ্বিতীয় পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে ব্রাদার্স ও মোহামেডানের বিপক্ষে জয় পেয়ে। কোচ মারুফ বলেছেন, গতিটা ধরে রাখতে হবে, তাহলে সামনেও ম্যাচ জেতা কঠিন হবে না। গাণিতিক হিসাবে শেখ জামালের চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে শেখ রাসেল। এমিলিরা শিরোপার জেতার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। আগের ভুল সংশোধন করে পুরো দলই উজ্জীবিত। তাই সমর্থকদের আশা ফুটবলে দেশসেরা ট্রফি শেখ রাসেলই জিতবে।