বয়স দুজনেরই প্রায় সমান। একজনের জন্ম ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বরে অন্যজনের একই বছরের আগস্টে। তারপরও দুজনের মধ্যে একটা চরম বৈপরীত্য গত কয়েক বছরে স্পষ্ট হয়ে গেছে। ২০১২ সালের পর আর কোনো গ্র্যান্ডস্লাম জিততে পারেননি সুইস কিংবদন্তি রজার ফেদেরার। আর সেরেনা উইলিয়ামস ২০১২ সালের পর আরও ৬টা গ্র্যান্ডস্লাম ট্রফি শোকেসে পুরেছেন। এই বৈপরীত্য দেখে রজার ফেদেরার হতাশ না হয়ে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। উইম্বলডনে ৩৩'র সেরেনার কাছে ২১'র মুগুরুজার পরাজয় থেকেই খুঁজেছেন অনুপ্রেরণা। তারও যে একটা গ্র্যান্ডস্লাম ট্রফি চাই! ১৮তম গ্র্যান্ডস্লাম জয়টা ফেদেরারের গতকাল রাতেই হয়তো হয়ে গেছে!
সেরেনা উইলিয়ামস এমনই। ফেদেরারের মতো কিংবদন্তিকেও যিনি ভক্তকূলের তালিকায় নাম লেখাতে বাধ্য করেন! হবে নাই বা কেন? ওপেন যুগে তো বটেই মেয়েদের টেনিসে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব কমই ছিল। স্টেফিগ্রাফের সময় যেমন এক মনিকা সেলেস ছাড়া তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজে পাওয়া যেত না। মার্গারেট কোর্টের সময়ও তেমন কেউ ছিল লড়াই করার মতো। ক্রিস এভার্টরাও রানীর আসনে সমাসীন ছিলেন অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই। কিন্তু সেরেনাকে! বড় বোন ভেনাসের সঙ্গেই তো তাকে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাছাড়া একজন মারিয়া শারাপোভা, ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, জাস্টিন হেনিন, মার্টিনা হিঙ্গিস, কিম ক্লাইস্টার্সদের মতো সেরা সেরা টেনিস তারকাদের সঙ্গে লড়াই করেছেন সেরেনা। আর ৩৩ বছরেও কেমন টিকে আছেন। এখনো অপরাজেয়! আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা তার কাছে নস্যি। এই যেমন ২১'র মুগুরুজাকে হারালেন ৬-৪, ৬-৪ গেমে। অথচ তারুণ্যের যে আলাদা একটা শক্তি আছে, প্রাণচাঞ্চল্য আছে ওটা যেন স্বীকারই করতে চান না সেরেনা। বরং ৩৩'র সেরেনা বলছেন, 'আমি কেবল নিজেকে আবিষ্কার করেছি।' ভবিষ্যৎ প্রতিপক্ষদের জন্য এ যে এক চরম হুমকি। আগস্টেই হবে বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেন। গত তিনবার সেখানে টানা চ্যাম্পিয়ন সেরেনা। এটা যে টানা চতুর্থ হতে পারে এখন পুরো টেনিস দুনিয়াই বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। তাহলে কি এ বছরই ওপেন যুগের সেরা তারকা স্টেফিগ্রাফকে (২২টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী) স্পর্শ করতে যাচ্ছেন সেরেনা!