হকি ফেডারেশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্লাহর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে মোহামেডান, মেরিনার্স, ওয়ারী, ওয়ান্ডারার্স ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাব। দাবি পূরণ না হওয়ায় গত বছর প্রিমিয়ার লিগ বয়কট করে। তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। যতদিন সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ করবে না পাঁচ ক্লাব হকির কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেবে না এ ঘোষণাও দিয়েছে। পাঁচ ক্লাব ছাড়া এবারও লিগ মাঠে গড়াতে যদি আরেক শীর্ষ ক্লাব ঊষা ক্রীড়াচক্র আপত্তি না তুলত। ঊষা বলছে, সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া তারা লিগে অংশ নেবে না। অথচ তাদের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বেশ কবার প্রিমিয়ার লিগের দল বদলের তারিখ নির্ধারিত হয়। যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন সবার অংশগ্রহণে লিগ শুরু করা। এ নিয়ে তিনি ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কবার বৈঠকও করেন। কিন্তু জটিলতা দূর করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত পাঁচ ক্লাবকে রাজি করাতে দায়িত্ব দেন ফেডারেশন সহ-সভাপতি রশিদ শিকদারকে। রশিদ আবার ঊষারও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
রশিদ বলেছিলেন, তিনি চেষ্টা চালাবেন পাঁচ দলকে মাঠে ফেরানোর। কিন্তু তিনিও এখন সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ চাচ্ছেন। একই কমিটির নির্বাচিত সহ-সভাপতি হয়েও কেন সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ চাচ্ছেন? এ ব্যাপারে রশিদ বলেন, উপমন্ত্রী জয় ও আমি জটিলতা দূর করতে সব রকম চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি, পাঁচ নয় আরো ক্লাবের একই কথা রহমত উল্লাহ পদত্যাগ ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি বলেন, রহমত ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু তার জন্য হকি অনিশ্চয়তায় বন্দী থাকবে তা আমি চাই না। তাই ব্যক্তিগতভাবে মনে করি রহমত ভাইয়ের স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত। যদি তিনি পদত্যাগ না করেন তাহলে কি করবেন, রশিদ বলেন, উনি কী করবেন তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু নির্বাহী কমিটির অনেক সদস্যই হকির বৃহত্তর স্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। এই ইন্ধন নাকি আপনিই জুগিয়েছেন? রশিদ আপত্তি জানিয়ে বলেন, এখানে ইন্ধনের প্রশ্ন উঠবে কেন? যতই দিন যাচ্ছে হকির পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। কমিটির অনেকে তাই বর্তমান কমিটিতে থাকতে চাচ্ছেন না। এ তালিকায় কতজন রয়েছেন, রশিদ বলেন, পদত্যাগের যে তালিকা তা বাস্তবায়ন হলে রহমত ভাইয়ের পদত্যাগ লাগবে না। নির্বাহী কমিটি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
রশিদ শিকদারের ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে তিনি সব কমিটিতে থাকেন আবার সুবিধা বুঝে বিদ্রোহী হয়ে উঠেন। এ ব্যাপারে তিনি জানালেন, আমি যা করি হকির স্বার্থের কথা চিন্তা করেই করি। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগের দাবি উঠল কেন, তার ভুল বা দোষটা কি? রশিদ বলেন, নিশ্চয় কোনো গলদ রয়েছে তা না হলে তার মতো হকির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকের পদত্যাগের দাবি উঠবে কেন? উপমন্ত্রী আপনাকে পাঁচ ক্লাবকে বুঝানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। আর আপনিই সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ চাচ্ছেন এতে তো জটিলতা আরও বেড়ে গেল। রশিদ বলেন, সত্যি বলতে কি এছাড়া সমস্যা নিরসনের পথ দেখছি না। এ ব্যাপারে খাজা রহমত উল্লাহ বলেন, রশিদ শিকদারের সঙ্গে আমার একাধিক বৈঠক হয়েছে। কখনো তিনি আমার পদত্যাগের কথা বলেননি। বলেছেন ধৈর্য্য ধরুন লিগ ঠিকই মাঠে নামবে। তাহলে কি এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন? হাসতে হাসতে বললেন, বুধবার অলিম্পিক ভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনে সবকিছু তুলে ধরব।