মাঠের রণকৌল ও শক্তিমত্তা সব সমীকরণে এগিয়ে ছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ২০১২ সালের ট্রেবল জয়ী দলের সামনে উত্তর বারিধারা নিছক আন্ডারডগ ছাড়া কিছুই নয়। ম্যাচ জুড়েই বল দখল থেকে শুরু করে সব দিক দিয়ে আধিপত্য ছিল বিগ বাজেটের টিম শেখ রাসেলের। কিন্তু রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে হেরে গেল প্রবল শক্তিমত্তার শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। শেখ রাশেলের এ হারে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে ঘটলো প্রথম অঘটন।
দলের গুরুত্বপূর্ণ তিন স্ট্রাইকার জাহিদ হোসেন এমিলি, শাখাওয়াত হোসেন রনি ও কমল ইনজুরিতে পড়ায় অনেকটা শক্তি খর্ব হয় শেখ রাসেলের। কিন্তু ম্যাচের শুরুতে বেশির ভাগ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ শেখ রাসেলের দখলে থাকলেও এমিলিদের অভাব ততটা পূরণ করতে পারেনি পল ও রুম্মন হোসেন। শুরু থেকেই আক্রমনাত্বক খেলতে থাকে শেখ রাসেল। ম্যাচের ১৫ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে শেখ রাসেলের। একটি সংঘবদ্ধ আক্রমনে বারিধারার রক্ষণ দূর্গে ঢুকে পড়ে রুম্মন। কিন্তু তাকে অবৈধভাবে বাঁধা দেয় রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় সোহেল রানা। এ সময় ফাউল করার কারণে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক দেন রেফারি। কিন্তু পলের নেওয়া শটটি সহজেই রুখে দেয় বারিধারার গোলরক্ষক এরশাদ। এরপর আক্রমনের পর আক্রমনে বারিধারার রক্ষণ দূর্গ কাপিয়ে তোলে শেখ রাসেল। কিন্তু ভাগ্য সহায়তা না পাওয়ার কারনে কাঙ্ক্ষিত গোল পায়নি শেখ রাসেল। অতিরিক্ত সময়ে শেখ রাসেল এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ পায়। ডান প্রান্ত থেকে রানা লক করেন। এ সময় ছোট বক্সে বল পেয়ে যান মধ্য মাঠের খেলোয়াড় জিয়ান ইকাঙ্গা।
তিনি তড়িগড়ি করে শট নিলে বলে চলে যায় গোল বারের বাইরে। এতে গোল বঞ্চিত হয় শেখ রাসেল। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে কোন দলই গোল করতে পারেনি। তবে বলের দখল ক্রীড়া নৈপুণ্যে দর্শকদের মাতিয়ে রাখে শেখ রাসেলের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের দ্বিতীয় অংশে এসেও ফুটবল নৈপুন্য দেখিয়ে যেতে থাকে শেখ রাসেল। ৫৮ মিনিটে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে অনেকটা বিপরীতে গোল খেয়ে বসে শেখ রাসেল।
বারিধারার খেলোয়াড় মাজাহার পিছন থেকে ধাক্কা দেয় শেখ রাসেলের বাবলুকে। বল লেগে যায় বাবলুর হাতে। ডি বক্সের মধ্যে বল ধরার ‘অপরাধে’ পেনাল্টি দেয় রেফারি। সুযোগ পেয়ে পেনাল্টিতে গোল করতে ভুল করেনি সবুজ। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বারিধারা ক্লাব। গোল খেয়ে আহত বাঘের মত গর্জে ওঠে শেখ রাসেল। বইয়ে দেয় আক্রমন বন্যা। ৮৯ মিনিটে বারিধারার ডি বক্সের মধ্যেই এক খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগে। শেখ রাসেলের খেলোয়াড়রা পেনাল্টির আবেদন করে। কিন্তু রেফারি তাদের সেই আবেদন নাকচ করে দেন। অতিরিক্ত সময়ে দু'দফায় গোল করে সমতায় ফেরার সুযোগ পায় শেখ রাসেল। কিন্তু জিয়ান ইকাঙ্গা গোলের সুযোগ মিস করে। শেষ মুহূর্তে পল গোল করে। কিন্তু রেফারি গোল বাতিল করে দেয়। ফলে ১-০ গোলে হার মানে বিগ বাজেটের টিম শেখ রাসেল।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শেখ রাসেলের প্রধান কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে , ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে বারিধার ক্ষেত্রে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বারিধারার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। বল বারিধারার খেলোয়াড়দের হাতে লাগলেও রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি।’
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের প্রথম ম্যাচে। আগামী ম্যাচগুলোতে আরও ভাল করার সুযোগ রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ভাল করার।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ