আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্তটা অবশেষে নিয়েই ফেললেন স্টিভেন জেরার্ড। কিছুদিন ধরেই তার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুজব উঠছিল। আরও খেলবেন, নাকি কোচিংয়ে মনোনিবেশ করবেন, তা জানতে উদ্বেগ ছিল সমর্থকরা। অবশেষে বুট তুলে রাখার সিদ্ধান্তই ইংল্যান্ডের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক। ২০১৪ বিশ্বকাপের পরেই জাতীয় দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এবার ক্লাব ফুটবলেও ইতি টানলেন তিনি।
অবসরের কারণ জানাতে গিয়ে জেরার্ড বলেন, ‘সময় শেষ হয়ে আসছিল বুঝতেই পারছিলাম। শরীর জবাব দিচ্ছিল, ব্যথা–যন্ত্রণা নিয়মিত লেগেই ছিল। গত কয়েক বছর ধরে বুঝতে পারছিলাম গতিও কমে যাচ্ছে। দলকে যা দিতে পারতাম, সেটা আর পারছিলাম না। ক্রমশ হতাশা গ্রাস করছিল।’
সেই সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, ‘যাদের আমি সব থেকে বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা করি, তাদের অনেকেই বলেছিলেন, নিজের কিছুটা বাকি রেখে খেলা ছাড়তে। এত বেশি না খেলতে, যাতে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। আমি নিজেও দেখছিলাম, গত তিন থেকে চার মাসে অনেক বেশি চোট পাচ্ছি। আগের তীক্ষ্ণতা খুঁজে পাচ্ছি না।’
ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের বিরুদ্ধে ২৯ নভেম্বর, ১৯৯৮ তে লিভারপুলের হয়ে অভিষেক হয় জেরার্ডের। তারপর দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি ক্লাব ছেড়ে যাননি। ৭১০টা ম্যাচ খেলেছেন লিভারপুলের হয়ে, রয়েছে ১২০টা গোল। দীর্ঘ ১৩ বছরের অধিনায়কত্বে ৮টি বড় ট্রফি জিতেছেন, যার মধ্যে সব থেকে স্মরণীয় ২০০৫ সালে ইস্তানবুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়, যে ম্যাচে মিলানের বিরুদ্ধে তিন গোলে পিছিয়ে পড়েও সেই তিন গোল শোধ করে টাইব্রেকারে জেতে লিভারপুল।
তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ একবারও না জিততে পারাটাই জেরার্ডের সব থেকে বড় আক্ষেপ হয়ে থাকবে। মিডফিল্ডে তার দাপট দেখে একসময় প্রত্যেকটি ক্লাব তাকে সই করতে উঠেপড়ে লেগেছিল। রিইয়াল মাদ্রিদসহ অনেক ক্লাব তাকে ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ও দেয়। কিন্তু রেডসদের প্রতি দায়বদ্ধ জেরার্ড শত প্রলোভনেও ক্লাব ছাড়েননি।
জাতীয় দলের হয়ে ১১৪টা ম্যাচে রয়েছে ২১টা গোল। ২০১৫ তে লিভারপুল ছেড়ে আমেরিকার লস এঞ্জেলেস গ্যালাক্সিতে যোগ দেওয়ার পরে ৩৪টা ম্যাচে ৫ গোল করেছেন। অবসরের পরেই এদিন বিশাল বিবৃতিতে লিভারপুলের সমস্ত সদস্য–সমর্থক, ইংল্যান্ড জাতীয় দল এবং গ্যালাক্সিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গেই তার পরিবারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে ভবিষ্যৎ কী, সে–ব্যাপারে খোলসা করেননি। আপাতত লিভারপুল একাডেমীতেই ছোটদের কোচিং করাবেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ নভেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-১৫