গতবারের ফাইনালিস্ট তারা। কিন্তু এবার ১৩টা ম্যাচ খেলে মাত্র ২টি ম্যাচে জয় পেয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোর সবার শেষে। অনেকেই বলছেন বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল, এবি ডি’ভিলিয়ার্সের ধারাবাহিক ব্যর্থতাই এর কারণ। কিন্তু বেঙ্গালুরুর খারাপ পারফরমেন্সের ব্যাখ্যা রিকি পন্টিংয়ের কাছে একটু অন্যরকম। তিনি সবার আগে তুলে ধরেছেন লোকেশ রাহুলের না থাকা।
পন্টিং বলেছেন, ‘লোকেশ রাহুলের না থাকাটা ওদের কাছে বিরাট ধাক্কা। গত বছর ও অসাধারণ খেলেছে। যা যা করেছে, ভাবা যায় না। তাই ব্যাটিং অর্ডারে ওপরের দিকে ওকে না পাওয়াটা ওদের বিরাট ক্ষতি। গত বছর ও আর বিরাট কোহলি দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি ছিল। ওরা যা খেলেছিল, তা নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন তুলতে পারেনি। এবার আইপিএলের আগে ভারতীয় দলের হয়েও দু’জনে একসঙ্গে কয়েকটা টেস্ট খেলেছে। কোনও সন্দেহ নেই, এবার ওপেনিংয়ে ওরা সেই ঝাঁজটা মিস করেছে। কিন্তু প্রতিটা পজিশনে পরিবর্ত প্লেয়ার তৈরি রাখা উচিত। সেটা ওরা করতে পারেনি।’
গত বছর রাহুল ৬টা ম্যাচে ওপেন করে নজর কেড়েছিলেন। তার পর গেইল ফেরার পর চার নম্বরে নেমেও ভাল খেলেছিলেন। এবার চোটের জন্য তিনি খেলতে পারেননি। আর কোহলি, ডি’ভিলিয়ার্স, গেইল, ওয়াটসন চারজনেই ব্যর্থ। চারজনের মিলিত ৩২টা ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি মাত্র ৫। গত বছর এই চারজনেরই মোট হাফ সেঞ্চুরি ছিল ১৫, সেঞ্চুরি ৪।
এটাকেই তুলে ধরে পন্টিং বলেন, ‘বেঙ্গালুরু বড় বেশি তারকা–নির্ভর। কিন্তু গত বছরের মতো এবার আর ওরা ভাল খেলতে পারেনি। কোহলি সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। ডি’ভিলিয়ার্স ভাল খেলেছে। গেইলও কয়েকটা উপযোগী ইনিংস খেলেছিল। আর ওয়াটসন ব্যাটিং, বোলিং দুটোতেই ভাল করেছিল। কিন্তু এবার কোহলি কিছুই করতে পারেনি। গেইল আর ডি’ভিলিয়ার্স দু–একটা ঝলক দেখিয়েছে। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা ছিল না। ওয়াটসনও এবার ম্যাচ জেতানো পারফরমেন্স করতে পারেনি। বারবার দল থেকে বাদ পড়েছে। ব্যাটিং অর্ডারেও ওকে ওঠানো–নামানো হয়েছে। এটা নিয়ে ওদের ভাবতে হবে। ওরা কয়েকজনের ওপর বড় বেশি নির্ভর করে। তারা এতটাই ধারাবাহিক যে, সেটা দলকে জেতানোর পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু এবার সেটা হয়নি।’
সামনের বছর নতুন করে সব দলের নিলাম হবে। সেটাকেই কাজে লাগানোর জন্য বেঙ্গালুরুকে পরামর্শ দিয়ে পন্টিং বলেছেন, ‘দলে ব্যালান্স দরকার। গোটা দলেই যেন গভীরতা থাকে। সেটা আরসিবি–র নেই। ওরা কয়েকজন প্লেয়ারকে প্রচুর টাকা দিচ্ছে। তাতে বাকি দলের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ছে। সামনের বছর দল গড়ার সময় ওদের গভীরতা নিয়ে ভাবতে হবে। ওরা তো কোনও নতুন ভারতীয় প্রতিভাকে তুলেই আনতে পারল না।’
বোলিংয়ের ওপর আরও জোর দেওয়া উচিত, জানিয়ে পন্টিংয়ের শেষ পরামর্শ, ‘ওরা ভারতের সেরা উইকেটে খেলছে। বল পড়ে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ব্যাটে আসে। ওদের মাঠটাও ছোট। সেই কারণেই ওদের দলটা ব্যাটসম্যানে ঠাসা। কিন্তু একটা রক্ষণাত্মক বোলিংও ওদের তৈরি করে ফেলতে হবে। এখন কিন্তু দেখা যাচ্ছে বহু টি ২০ ম্যাচ বোলাররা জেতাচ্ছে।’
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৭