ইংল্যান্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করেছে ক্রোয়েশিয়া। মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ২-১ গোলে হেরেছে ইংলিশরা। ফলে ‘ইটস কামিং হোম’ (ট্রফি ঘরে ফিরে আসছে) স্লোগানে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলেও ফাইনালের মঞ্চে নামতেই পারলো না ইংল্যান্ড।
২৮ বছর পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেও ফাইনালের আগেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়া ইংল্যান্ডের উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের কোচ হোসে মরিনহো।
তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকে যেভাবে খেলছে ইংল্যান্ড, এজন্যই তাদের ফাইনাল খেলা উচিত ছিলো। এভাবে তার বাদ পড়াটা উচিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এখন ইংল্যান্ডের খারাপ লাগাটা ভীষণ আকারের। তাদের পারফরমেন্স আমার ভালো লেগেছে।’
গ্রুপ পর্বে রানার্স-আপ হয়েই শেষ ষোলোতে উঠে ইংল্যান্ড। শেষ ষোলোতে কলম্বিয়ার সাথে ১-১ গোলে ড্র করে ট্রাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয় পায় ইংলিশরা। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতে সেমিতে পা রাখে হ্যারি কেনের দল। তবে শেষ চারে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ২-১ গোলে হার মানে তারা। তাই ৫২ বছরের পুরনো স্মৃতি আবারো ফিরিয়ে আনতে পারল না ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ আসরে সর্বশেষ ১৯৬৬ সালে ফাইনাল খেলেছিলো ইংলিশরা। ওই বার শিরোপা জিতেই ছাড়ে ইংল্যান্ড।
এবারও ৫২ বছর আগে সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনার সুর্বণ সুযোগ ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু তারা ব্যর্থ। বেশি আত্মবিশ্বাসী হওয়াটাই কাল হলো ইংল্যান্ডের বলে মনে করেন মরিনহো।
বিশ্বকাপের খেলা দেখতে রাশিয়ায় থাকা মরিনহো সেখানকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শেষ আটের ম্যাচ জিতে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে ইংল্যান্ড। এত বেশি আত্মবিশ্বাসী হওয়া উচিত হয়নি তাদের। এই আত্মবিশ্বাসই কাল হলো ইংলিশদের। তারা ভেবেছিলো, আগের ম্যাচগুলোর মতো সহজেই সেমিতে জিতবে। এছাড়া প্রথম গোল পেয়ে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখে ফেলে ইংল্যান্ড। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিলো, ম্যাচের তখনো অনেক সময় বাকী।’
ভালো খেলার কারণেই সেমিফাইনালে উঠতে পারে ইংল্যান্ড। তবে এত দূর এসে ইংল্যান্ডের ফাইনাল খেলা উচিত ছিলো বলে মনে করেন মরিনহো।
তিনি বলেন, ‘তাদের খেলা আমার মন কেড়েছে। ইংল্যান্ডের উচিত ছিলো এই দল ও এই পারফরমেন্স নিয়ে এবার ফাইনাল খেলা। দলটি সবদিক দিয়েই ভালো ও ভারসাম্যপূর্ণ ছিলো। আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নতি করেছে এ দলটি। এ দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই বেশ তরুণ। কিন্তু সত্যি বলতে নিজেদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করলো ইংল্যান্ডকে।’
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম