অধিকার কেড়ে নেয়া হলে ইরানও এএফসি'র বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করবে ইরানের ফুটবল ফেডারেশন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন বা এএফসি'র পক্ষ থেকে পাঠানো একটি চিঠি পেয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ইরানি ক্লাবগুলোর যেসব খেলা ইরানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এএফসি'র পক্ষ থেকে সেগুলোকে 'নিরপেক্ষ দেশে' অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এএফসি তার নয়া সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইরানে নিরপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছে। এএফসি'র এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, এশিয়ান লীগের জন্য নির্ধারিত ইরানের চারটি দলের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের বাকি খেলাগুলোতে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইরানের এ চারটি ফুটবল দল হচ্ছে তেহরান এসতেগলাল, তেহরান পার্সপোলিস, ইস্পাহান সেপাহান এবং মাশহাদ শাহরে খোদরো। ইরানের ফুটবল ফেডারেশন এএফসি'র এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে একে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছে।
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন বা এএফসি'র সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় তেহরান এসতেগলাল ফুটবল ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইসমাইল খালিল যাদে বলেছেন, ইরান হচ্ছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মিথ্যা প্রচারণা বাস্তবতাকে আড়াল করতে পারবে না। নিরপেক্ষ কোনো দেশে খেলা অনুষ্ঠানের দাবি আমরা মানব না কেননা এটা আমাদের জন্য মর্যাদাহানিকর ও অপমানজনক।
পার্সপোলিস ক্লাবের নির্বাহী প্রধান মোহাম্মদ হাসান আনসারি ফার্দ এই ক্লাবের ওয়েব সাইটে বলেছেন, ইরান হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ এবং আমাদের এ মর্যাদাকে কোনোভাবেই খাটো হতে দেব না।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আসল বিষয়টি হচ্ছে ইরানকে অনিরাপদ হিসেবে তুলে ধরার জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এএফসি এ ধরণের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি সপ্তাহে সোমবার তেহরানে আল কুয়েত ও এসতেগলাল ক্লাবের মধ্যে এ খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুয়েতের আল রাই দৈনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইরানের বর্তমান পরিস্থিতিতে আল কুয়েত ক্লাব তেহরান সফরে যেতে ইচ্ছুক নয় এবং এসতেগলাল ক্লাবের সঙ্গে খেলা করবে না। এ কারণে নিরপেক্ষ কোনো দেশে খেলা অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এ ধরণের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, নিরাপদ পরিবেশে খেলা অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা এএফসিকে দেয়া হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, ইরানে খেলতে না দেয়ার এএফসি'র সিদ্ধান্ত এই সংস্থার চার নম্বর ধারা এবং ফিফা'র ১৩ নম্বর ধারার লঙ্ঘন। ইরানের মাটিতে খেলার অধিকার এ দেশটির রয়েছে। এ অধিকার কেড়ে নেয়া হলে ইরানও ফিফার ৫৯ ও ৬০ নম্বর ধারা অনুযায়ী আদালতে অভিযোগ উত্থাপন করবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিএফসি'র এ ধরনের সিদ্ধান্ত খেলাধুলার সঙ্গে নোংরা রাজনীতিকে জড়িয়ে ফেলবে যা কিনা পাশ্চাত্যেরই ষড়যন্ত্র। এ সিদ্ধান্ত একটি জাতির মর্যাদা ও আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশনের জন্য ক্ষতিকর। সূত্র : পার্সটুডে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক