কম রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতা যায়। কিন্তু তার জন্য প্রাণপাত করে দিতে হয় বোলারদের। আরসিবির বিরুদ্ধে চলতি আইপিএলে নাইটদের দ্বিতীয় ম্যাচেই হারের মুখ দেখতে হলো। ডু প্লেসিদের হাত থেকে ম্যাচ বের করার চেষ্টা করেছিলেন উমেশ-সাউদিরা। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই চেন্নাইকে হারানোর ফলে কোথাও একটা কি আত্মতুষ্টি কাজ করছিল নাইটদের মধ্য়ে? কেকেআর সমর্থকদের মনে প্রশ্নটা জাগতেই পারে। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ছাপ রেখে গেলেন ভানিন্দু হাসারঙ্গা এবং দীনেশ কার্তিক।
১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে ভানিন্দু হাসারঙ্গাকে যখন আরসিবি মেগা নিলামের মঞ্চ থেকে দলে ফিরিয়েছিল, তখন প্রশ্ন উঠেছিল, লঙ্কান ক্রিকেটার কতটা সাফল্য দিতে পারবেন আরসিবিকে। তার প্রমাণটা হাসারঙ্গা দিলেন এবারের আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচেই। টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে হয় কেকেআরকে। প্রথম ম্যাচের মতো এ দিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ ভেঙ্কটেশ আইয়ার (১০)। যদিও চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে নাইটদের আরেক ওপেনার অজিংকা রাহানে ভরসা দিয়েছিলেন, তবে এ ম্যাচে তার ব্যাটও জ্বলে ওঠেনি। হাসারঙ্গা-সিরাজ-আকাশদীপদের দাপটে তাসের ঘরের মতো ধ্বসে পড়ে নাইটদের ব্যাটিং। কোনও ক্রিকেটার ব্যক্তিগত ৩০ রানও করতে পারেননি।
ক্যাপ্টেন শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাটও ছিল নিষ্প্রভ। মাত্র ১৩ রান করে ভানিন্দু হাসারঙ্গার শিকার হন শ্রেয়স। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে নাইটরা। ১০ রান করে আকাশদীপকে উইকেট দেন নীতিশ রানা। পাওয়ার প্লে'র মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে কেকেআর। এরপর নাইটদের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে থাকেন হাসারঙ্গা-হর্ষলরা। নারিন-রাসেল বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই তাদের ফেরত পাঠান হাসারঙ্গা-হর্ষলরা। ১২ রান করেন নারিন, ১৪ রান এসেছে স্যাম বিলিংসের ব্যাট থেকে। আর নাইটদের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন রাসেল (২৮)। তবে ১২৯ টার্গেটটা মোটেও কঠিন ছিল না আরসিবির মতো হেভিওয়েট দলের সামনে।
এরপরও শুরুটা ভালো করেছিলেন উমেশ যাদবরা। আরসিবির ওপেনার অনুজ রাওয়াতকে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ফেরান উমেশ। দ্বিতীয় ওভারে ডু প্লেসিকে ফেরান টিম সাউদি। তৃতীয় ওভারে আবার উইকেট প্রাপ্তি হয় উমেশের। এবার তিনি বিরাট কোহলির বড় উইকেট নেন। পর পর তিন ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে আরসিবির ওপর কিছুটা চাপ তৈরি করেছিল কেকেআর। কিন্তু প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা করতে থাকেন ডেভিড উইলি ও শেরফান রাদারফোর্ড। শেষ পর্যন্ত এই জুটিকে ভাঙেন নারিন। কিন্তু ততক্ষণে আরসিবি মোটামুটি ভালো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল। ১৮ রান করে উইলি মাঠ ছাড়েন। এরপর রাদারফোর্ডকে সঙ্গ দিতে থাকেন শাহবাজ আহমেদ। সেই জুটিকে ভাঙার কাজটি করেন নাইটদের মিস্ট্রি স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। ২৭ রান করে আউট হন শাহবাজ। এরপর রাদারফোর্ডকে (২৮) ফেরান সাউদি।
শেষ বেলায় আরসিবিকে জেতানোর দায়িত্ব গিয়ে পড়ে দীনেশ কার্তিকের কাঁধে। তার সঙ্গে অপর প্রান্তে ছিলেন হর্ষল প্যাটেল। শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে পর পর একটি ছয় ও চার মেরে জেতান কার্তিক। ৪ বল বাকি থাকতেই কাঙ্খিত জয় তুলে নেয় আরসিবি। ৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ডিকে। ১০ রানে নট আউট থাকেন হর্ষল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
কলকাতাঃ ১২৮ (আন্দ্রে রাসেল ২৫, উমেশ যাদব ১৮, হাসারঙ্গা ৪-২০, আকাশদীপ ৩-৪৫)।
ব্যাঙ্গালুরঃ ১৩২-৭ (শেরফান রাদারফোর্ড ২৮, শাহবাজ আহমেদ ২৭, উমেশ ২-১৬, সাউদি ৩-২০)।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ