পারফরম্যান্স নিয়ে সংশয় ছিল না কখনও। কিন্তু অ্যালেক্স হেলসকে বিশ্বাস করতে পারছিল না দল। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে দাপিয়ে বেড়ালেও সুযোগ মিলছিল না জাতীয় দলে। জনি বেয়ারস্টোর চোটে তিন বছর পর ইংল্যান্ড দলে ফিরলেন বিস্ফোরক এই ওপেনার।
ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এক বিবৃতিতে হেলসকে দলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে। বিশ্বকাপের পাশাপাশি আসন্ন পাকিস্তান সফরের ১৯ সদস্যের দলেও রাখা হয়েছে ৩৩ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে।
প্রথম ঘোষিত দলেই হয়তো থাকতে পারতেন হেলস। কিন্তু বাজে সময় কাটানো জেসন রয়কে বাদ দিলেও ডাক মেলেনি তার। শেষ পর্যন্ত অদ্ভুত এক দুর্ঘটনায় বেয়ারস্টো চোট পাওয়ায় দরজা খুলে গেল হেলসের সামনে। গলফ কোর্সে পা পিছলে পড়ে বাঁ পায়ের নিচের অংশে চোট পান ৩২ বছর বয়সী বেয়ারস্টো। এতে তিনি ছিটকে যান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে।
২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে হেলসকে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্টের মাস খানেক আগে ডোপ পরীক্ষায় উতরাতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধ হন এই ওপেনার। এরপর আর জাতীয় দলের আশেপাশে আসতে দেওয়া হয়নি তাকে। আগেও শৃঙ্খলাভঙ্গের নানা ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ওই সময়ের অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান বলেছিলেন, হেলসের সঙ্গে দলের বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে।
এতে মনে হচ্ছিল জাতীয় দলের দরজা হয়তো চিরতরেই বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মর্গ্যানের অবসরের পর সাম্প্রতিক সময়ে হেলসের ফেরার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহে দল ঘোষণার সময় ইসিবি ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি বলেছিলেন, হেলসের কাছে তারা জানতে চেয়েছেন যে, কেন তাকে দলের বাইরে রাখা হয়েছে। কি আশ্বাস দিয়েছিলেন, এখন থেকে কেবল মাঠের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই হেলসকে জাতীয় দলের বিবেচনায় রাখা হবে।
পিএসএল, বিগব্যাশ, বিপিএলসহ যেখানেই খেলেছেন জাতীয় দলে ফেরার দাবি জানিয়ে রেখেছেন হেলস। ‘দা হানড্রেড’-এর এবারের আসরে ট্রেন্ট রকেটসের শিরোপা জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ১৫২.৩৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৫৯ রান। এই টুর্নামেন্ট চলাকালীন ইংল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়ায় হবে, এটাও হয়তো হেলসের দলে ফেরার পথে রেখেছে বড় ভূমিকা। ২০১৯ সাল থেকে বিগব্যাশে সিডনি থান্ডারের হয়ে খেলছেন তিনি। এই প্রতিযোগিতায় ৪৫টি ম্যাচে ১১টি ফিফটির পাশাপাশি তার নামের পাশে একটি সেঞ্চুরিও রয়েছে। তার এই অভিজ্ঞতা বিশ্বমঞ্চে কাজে লাগতে পারে ইংল্যান্ডের।
হেলসের অভিজ্ঞতার ঝুলি ইংল্যান্ডকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে পাকিস্তান সফরেও। ২০০৫ সালের পর দেশটিতে খেলতে যায়নি ইংলিশরা। তবে ২০১৮ সাল থেকে পিএসএলে খেলার সুবাদে সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে বেশ পরিচিত হেলস। সফরে সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল।
২০১১ সালে অভিষেকের পর থেকে ২০ ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬০ ম্যাচ খেলেছেন হেলস। ৩১.০১ গড়ে ১৩৬.৬৫ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ১ হাজার ৬৪৪। ফিফটি ছয়টি ও সেঞ্চুরি একটি। একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
ইংলিশদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে আগামী ২২ অক্টোবর, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ