৭০৭ রানের ম্যাচ, ২টি সেঞ্চুরি, ৫টি ৫০ ছাড়ানো স্কোর, প্রায় ৯৮ ওভারের ক্রিকেট! সংখ্যাগুলোই নিশ্চিতভাবে জানান দিচ্ছে কতটা উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচ হয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রোমাঞ্চ, উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনার পারদ চরমে তুলে দুরন্ত ক্রিকেট খেলে ইংল্যান্ডের ৩৫১ রান টপকে ৫ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। অজিদের ইংলিশ বধে নায়ক জশ ইংলিস। ধারাভাষ্যে মাইক আথারটন কয়েকবার জশ ইংলিসকে বলে ফেলেছিলেন ‘ইংলিশ।’ সেটা নিয়ে বেশ মজা করলেন সহধারাভাষ্যকার।
অজিদের জয়ের নায়ক ইংলিস ছক্কা মেরে শেষ করে দেন ম্যাচ। পাঁচে নেমে মাত্র ৭৭ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে তিনি অপরাজিত থাকেন ১২০ রানে। ৮৬ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে আটটি চার ও ছয়টি ছক্কা।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে সাবেক এই ইংল্যান্ড অধিনায়ক মজা করে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে মজা করে বললেন, “জশ ইংলিসের ইংলিশ পাসপোর্ট কি এখনও আছে?”
এতক্ষণ পর্যন্ত বেশ রাশভারী চেহারায় কথা বলছিলেন স্মিথ। আথারটনের প্রশ্ন শুনে শব্দ করে হেসে উঠলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। চওড়া হাসিতে ছোট্ট করে বললেন, ‘জানি না আছে কি না, তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে… যদিও তাকে ছাড়ছি না, সে কোথাও যাচ্ছে না…।”
স্মিথ সেটুকু না বললেও চলত। ইংলিস এখন পুরোদমে অস্ট্রেলিয়ান তো বটেই, অস্ট্রেলিয়া দলেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোথাও চলে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না!
লাহোরে শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য ছিল ৩৫২। আইসিসি টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সাড়ে তিনশ রান তাড়ায় জয়ের নজির নেই তখনও। খর্বশক্তির দল নিয়ে আসা অস্ট্রেলিয়া সেই রান তাড়ায় পাঁচ ওভারের মধ্যে হারায় ব্যাটিং লাইন আপের মূল দুই ভরসা ট্রাভিস হেড ও স্টিভেন স্মিথকে। পরে ম্যাথু শর্ট (৬৩) ও মার্নাস লাবুশেন (৪৫) একটি জুটি গড়ে তুললেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। এই দুইজনের বিদায়ে দলের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩৬।
অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়কেই তখন মনে হচ্ছিল অবিশ্যম্ভাবী। কিন্তু ইংলিসের তো অস্ট্রেলিয়ান মানসিকতা গেঁথে গেছে হৃদয়ে। সঙ্গী পেলেন তিনি অ্যালেক্স কেয়ারিকে। দুজনই মূলত কিপার। তবে এই ম্যাচে কিপিং করেছেন ইংলিস। মাঠে তিনটি ক্যাচ নিয়েছেন কেয়ারি। এর মধ্যে প্রথমটি অসাধারণ, তৃতীয়টি দুর্দান্ত। ফিল্ডিংয়ের সেই আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হলো কেয়ারির ব্যাটিংয়ে। ইংলিস ছিলেন নিজের সেরা ছন্দে।
সব চাপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ১১৬ বলে ১৪৬ রানের জুটি গড়লেন দুইজন। ৬৩ বলে ৬৯ রান করে কেয়ারি আউট হলেও ইংলিসের থামাথামি নেই। চোখধাঁধানো পুল-হুক, কাট, রিভার্স র্যাম্প আর রিভার্স ল্যাপ, দুর্দান্ত সব ড্রাইভে ইনিংস সাজিয়ে দলকে জিতিয়ে অপরাজিত রইলেন ৮৬ বলে ১২০ রানের ইনিংস খেলে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম