প্রযুক্তি ডিভাইস এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিত্যসঙ্গী। ফলে এসবের মাধ্যমে ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজ করার সুযোগ মিলে থাকে। তবে কেনার আগে অবশ্যই ভালো কনফিগারেশন কি না তা যাচাই করে নিন...
প্রযুক্তি খাতে আজও ২০২০ সালের করোনা সংক্রমণ এবং এর পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব রয়েছে। ফলে নতুন কম্পিউটার-ল্যাপটপ-স্মার্টফোনে এমনকি যে কোনো প্রযুক্তি ডিভাইস ভ্যাট আরোপের পাশাপাশি ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে এখন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে এসব ডিভাইসের দাম। আর তাই কাক্সিক্ষত ডিভাইস চলে গেছে অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। মধ্যম মানের ল্যাপটপ কিনতেই দরকার ৫০ হাজার টাকার বেশি। তাই তো অপেক্ষাকৃত কম দামে কেনার সুযোগ থাকায় এখন অনেকেই ঝুঁকছেন পুরনো কিংবা ব্যবহৃত স্মার্টফোন ও ল্যাপটপের দিকে।
তবে পুরনো ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, কেনার আগে যেসব বিষয় জানতে হবে, সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে
পুরনো ল্যাপটপের দাম কম হলেও সব যন্ত্রাংশ ভালোভাবে কাজ নাও করতে পারে। বিক্রয়োত্তর সেবাও মেলে না। ফলে অনেকেই না বুঝে পুরনো ল্যাপটপ কিনে পস্তাতে থাকেন। এ জন্য কেনার আগে অবশ্যই ল্যাপটপের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের তথ্য ভালোভাবে জানতে হবে। এক্সপার্টদের মতে, পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই সেটি চালু করে প্রসেসর, র্যাম ও এসএসডির (সলিড-স্টেট ড্রাইভ) ক্ষমতা ঠিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে। ল্যাপটপের পর্দা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই পর্দায় কোনো ডটবিন্দু বা আলো কমবেশি হয় কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে। ল্যাপটপের পর্দার কোনো অংশ ভাঙা বা স্ক্র্যাচ পড়লে সেটি না কেনাই ভালো। কি-বোর্ডের সব অংশ ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা আলাদাভাবে পরখ করতে হবে। অনেক সময় ল্যাপটপের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভালো থাকলেও টাচপ্যাড ঠিকমতো কাজ করে না। আর তাই ল্যাপটপের টাচপ্যাডও পরীক্ষা করতে হবে। বেশির ভাগ পুরনো ল্যাপটপের ব্যাটারি, চার্জার বা পাওয়ার অ্যাডাপ্টরের কার্যকারিতা কম থাকে। আর তাই ল্যাপটপ কেনার আগে ব্যাটারি, চার্জার বা পাওয়ার অ্যাডাপ্টর ভালোভাবে কাজ করছে কি না, তা জানা প্রয়োজন। ল্যাপটপের চার্জ কতক্ষণ থাকে, সে বিষয়েও জানতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাটারি বদলে ফেলে ল্যাপটপ কিনতে পারেন। ল্যাপটপে প্রসেসরের গতি জানানোর পাশাপাশি হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করা না থাকলে বিক্রেতাকে দিয়েই সেটি ইনস্টল করিয়ে নিলে ভালো হয়। ল্যাপটপ কেনার আগে হার্ড ড্রাইভের আকার ও র্যামের ক্ষমতার মধ্যে সামঞ্জস্য রয়েছে কি না, তা জানতে হবে। কারণ, হার্ডড্রাইভে অনেক জায়গা থাকলেও র্যাম কম থাকায় ল্যাপটপ ধীরগতিতে কাজ করে। পাশাপাশি ল্যাপটপের ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, ওয়েবক্যাম ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তাও পরখ করতে হবে।
পুরনো স্মার্টফান কেনার আগে
পুরনো ফোন কেনার আগে প্রথমেই ফোনের বাহ্যিক অংশ ও পর্দায় কোনো ত্রুটি রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে হবে। পর্দায় দাগ রয়েছে কি না বা ফোনের পর্দায় সব বাটন ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা দেখতে হবে। ফোনটি কত দিনের পুরনো, তা অবশ্যই জানতে হবে। কারণ, বেশি পুরনো মডেলের ফোন হলে অপারেটিং সিস্টেমে সফটওয়্যার হালনাগাদ করা যায় না। প্রয়োজনে ফোনটির মডেল ইন্টারনেটে সার্চ করে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন। এ ছাড়া ফোনের জন্য ব্যাটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফোনটির ব্যাটারি একবার চার্জ কতক্ষণ ব্যবহার করা যায়, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এ জন্য ব্যাটারির ক্ষমতা জানার পাশাপাশি চার্জারের কার্যকারিতাও পরীক্ষা করতে হবে। ফোনে হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে হবে। এমনকি পরবর্তীকালে কটি হালনাগাদ পাওয়া যাবে, তাও জানতে হবে। ফোনের ধারণক্ষমতা কত, তা জেনে নিতে হবে। সবশেষে পুরনো ফোন কেনার আগে বিক্রেতার পরিচয় সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যানের ইসিএস কম্পিউটার সিটি, মোতালেব প্লাজা, মেট্রো শপিং মলসহ বিভিন্ন কম্পিউটার মার্কেটে মিলছে ব্যবহৃত ফোন ও ল্যাপটপ। পাশাপাশি ব্যবহৃত কিংবা পুরনো স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ বিক্রির জন্য অনলাইনেও অসংখ্য মার্কেটপ্লেস গড়ে উঠেছে। যেখানে সাশ্রয়ী মূল্যে পেয়ে যাবেন- আপনার পছন্দের ডিভাইস।
লেখা : টেকনোলজি ডেস্ক