মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পানির বাড়তি বিল নিয়ে অসন্তোষ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

পানির বাড়তি বিল নিয়ে অসন্তোষ

সিলেট নগরীতে সিটি করপোরেশনের সরবরাহকৃত পানির বিল বাড়ানো হয়েছে। সঞ্চালন পাইপের আকার ভেদে আবাসিক ও বাণিজ্যিক পানির বিল দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। পানির বাড়তি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ চলছে। অনেক ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও জনদাবির প্রতি একাত্ম হয়ে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি পত্রিকায় পানির বিল বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি দেয় সিলেট সিটি করপোরেশন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে পানির বর্ধিত বিল। প্রতি মাসে আবাসিক সংযোগে আধা ইঞ্চি ডায়ামিটারের (ব্যাস) লাইনে বিল ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বিল ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা এবং এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার টাকার পরিবর্তে দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি সংযোগে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে মাসিক বিল ৪০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়। এ ছাড়া এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মাসিক বিল দেড় হাজার টাকার পরিবর্তে ২ হাজার ২০০ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা এবং সরকারি গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে।

চলতি ডিসেম্বর মাস থেকে পানির বর্ধিত বিল বাসাবাড়িতে পাঠানো শুরু হলে দেখা দেয় বিপত্তি। বর্ধিত বিল হাতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষ। বিলের কপি নিয়ে সাধারণ মানুষ ছুটছেন স্থানীয় কাউন্সিলরদের কাছে। করোনা পরিস্থিতিতে পানির বিল বাড়ানোকে সিটি করপোরেশনের জনবিরোধী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। নাগরিক এই আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে পানির বর্ধিত বিল বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন তারা। গত সোমবার সিটি করপোরেশনে গিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে পানির বর্ধিত বিল প্রত্যাহারের দাবি জানান বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর।

পানির বিল বাড়ানো প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ জানান, করোনার কারণে মারাত্মক আর্থিক সংকটে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় পানির বিল বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এ বিষয়ে মেয়রকে পরিষদের সভা আহ্বানের অনুরোধ জানিয়েছি। পানির বর্ধিত বিল প্রত্যাহার করা না হলে নগরবাসী যে আন্দোলনের ডাক দেবেন তাদের সঙ্গে থাকব।

এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরীতে অনেকেই অবৈধ সংযোগ নিয়ে পানি ব্যবহার করছেন। অনেকে ২০০ টাকা হারেও বিল দিচ্ছেন না। বছরের পর বছর বিল বকেয়া পড়ে আছে তাদের কাছে। এ ছাড়াও অনেকে নিজের লাইন থেকে ভাড়াটেদের ৮-১০টি অবৈধ লাইন দিয়েছেন। এদেরে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। আর যারা নিয়মিত বিল দিচ্ছেন তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে। যারা পানির বিল বছরের পর বছর বকেয়া রেখেছেন তারাই মূলত আন্দোলন করছেন।

সর্বশেষ খবর