তিন বছর আগেই কথা ছিল ব্যস্ত মহানগরী থেকে টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়া হবে নওদাপাড়া এলাকায় রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নির্মাণ করা টার্মিনালে। কয়েক দফা বৈঠকও হয় সিটি মেয়র ও বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে। কিন্তু এত দিনেও নেই তার উদ্যোগ। ফলে ব্যস্ত শহরের ভিতরেই থেকে গেছে টার্মিনাল।
রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র গড়ে তোলা হয়েছে বাস স্টপেজ। আন্তজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো থামছে এসব স্টপেজে। তবে স্টপেজের জন্য নির্ধারিত টার্মিনাল থাকলেও নগরীর ভিতরই রাখা হচ্ছে বাস। এতে বাড়ছে যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনা।
নগরীর শিরোইল এলাকায় আছে পুরোনো টার্মিনাল। মধ্য শহরে টার্মিনাল হওয়ায় সেটি সরিয়ে নিতে ২০১১ সালে নতুন আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) জানিয়েছে, নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। নগরীর যানজট নিরসন ও যাত্রীসেবা বৃদ্ধিতে ৭ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে এ টার্মিনাল গড়ে তোলে আরডিএ। ৭ দশমিক ৪১ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা এ টার্মিনালে একসঙ্গে প্রায় ৫০০টি বাস দাঁড়াতে পারবে।
তবে সেই টার্মিনাল কাজে আসছে না। বাস চালক ও মালিকদের কারণে সেটি পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না। ঢাকাগামী জেলার মধ্যে চলাচলকারী বাস এখনো শিরোইল টার্মিনাল থেকে ছাড়ে। দূরপাল্লার অন্য বাসগুলোর কিছু নওদাপাড়া থেকে ছেড়ে এলেও সেগুলো আবার পদ্মা আবাসিক এলাকার ভিতর দিয়ে ভদ্রার মোড়ে এসে যাত্রী তোলে। নওগাঁ রুটে চলাচলকারী বাসগুলো যাত্রী তুলতে রেল ভবনের বিপরীত পাশে থেমে থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বাস থেমে থাকে বিন্দুর মোড়ে। ফলে নগরীজুড়ে যানজট লেগেই থাকছে। সকাল ১১টার দিকেও ব্যস্ততম ওই সড়কে বাস স্টপেজের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। এতে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় স্থানীয়দের।
নওদাপাড়া টার্নিমালে গিয়ে দেখা গেছে, মূল টার্মিনাল ভবনটির জীর্ণদশা। যাত্রীদের বসার চেয়ারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে অযত্ন-অবহেলায়। যেখানে-সেখানে ময়লা ও আবর্জনার স্তূপ। নির্মিত ২০টি আন্তজেলা ও অভ্যন্তরীণ বাস কাউন্টারের অর্ধেকই বন্ধ। টার্মিনালে নেই যাত্রীর আনাগোনা।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল জানান, নিরাপত্তা, যাত্রী ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই তারা ভদ্রা এলাকায় বাস থামিয়ে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে চলে যান। নওদাপাড়ার টার্মিনালটি এখনো পুরোপুরি ব্যবহার উপযোগী হয়নি। তারপরও সেখানেই বাস রাখছেন।