সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রথম শহীদ মিনারের গল্প

রকমারি ডেস্ক

প্রথম শহীদ মিনারের গল্প

ইতিহাসকে হৃদয়ে ধারণ করতে মানুষ নির্মাণ করে শহীদ মিনার। মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবের সবচেয়ে বড় জায়গা দখল করে আছে। তেমনি ভাষা শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে গড়ে তোলা হয় প্রথম শহীদ মিনার। ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকালে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু করে রাতের মধ্যেই শেষ করেন। দৈনিক আজাদে ছাপা হয় শহীদ মিনারের খবর। শিরোনাম ছিল- ‘শহীদ বীরের স্মৃতিতে’। ঢামেক ছাত্র হোস্টেলের (ব্যারাক) ১২ নম্বর শেডের পূর্বপ্রান্তে মিনারটি তৈরি হয় কোনাকুনিভাবে হোস্টেলের মধ্যবর্তী রাস্তার গা-ঘেঁষে। উদ্দেশ্য ছিল, বাইরের রাস্তা থেকে যেন সহজেই চোখে পড়ে এবং যে কোনো শেড থেকে বেরিয়ে এসে ভিতরের লম্বা টানা রাস্তাতে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে। প্রথম সেই শহীদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উঁচু, ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকিতে ছিলেন জি এস শরফুদ্দিন (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন নামে পরিচিত), ডিজাইন করেছিলেন বদরুল আলম। সঙ্গে ছিলেন সাঈদ হায়দার। তাঁদের সহযোগিতা করেন দুজন রাজমিস্ত্রি। ঢাকা মেডিকেলের ভবন সম্প্রসারণের জন্য জমিয়ে রাখা ইট, বালু ও পুরান ঢাকার পিয়ারু সরদারের গুদাম থেকে আনা সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয় সেই স্মৃতির মিনার। ভোর হওয়ার পর একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় সেটি। ওই দিনই অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন। তবে স্থায়িত্ব পায়নি ভাষা শহীদদের স্মরণে তৈরি প্রথম সেই মিনারটি। আজাদ সম্পাদকের উদ্বোধনের দিনই পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহীদ মিনারটি গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর ঢাকা কলেজেও একটি শহীদ মিনার তৈরি করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু দিনের মধ্যে সেটিও সরকারের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর