বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রস্তুতি টিপস

জেএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য দরকারি পরামর্শ

জেএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য দরকারি পরামর্শ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমরা যারা এ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা দিতে যাচ্ছ তারা নিশ্চয়ই জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছ। তবে মনে রাখতে হবে পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে ভালো প্রস্তুতির পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় যেমন পরীক্ষার কেন্দ্রে উত্তরপত্র পাওয়ার পর করণীয় কী, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার আগ মুহূর্তে কী কী সঙ্গে নিতে হবে, পরীক্ষার আগের রাতে কী করা যাবে আর কী করা থেকে বিরত থাকতে হবে, খাতায় উত্তর উপস্থাপন কেমন হতে হবে, কোনো একটি পরীক্ষা অপ্রত্যাশিতভাবে খারাপ হয়ে গেলে কী করা যাবে না এসব বিষয়ে অবগত থাকা জরুরি। সন্তানের পরীক্ষাকালীন অভিভাবকদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তাই পরীক্ষাকালীন তোমাদের সার্বিক প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত এ বিষয়ে দরকারি পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার উত্তরাস্থ ‘ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ’। নিম্নে উল্লিখিত পরামর্শ যথাযথভাবে মেনে চললে তোমাদের সাফল্য অবশ্যম্ভাবী।

পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি

♦   রুিটিন মাথায় রেখে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রথম পরীক্ষার দিন অন্তত ৪৫ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আসন বিন্যাস জেনে নিবে। এ ব্যাপারে একদমই তাড়াহুড়া করবে না।

♦  প্রতিটি পরীক্ষার দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে পৌঁছবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার মুহূর্তে প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, একাধিক কলম, পেন্সিল, ইরেজার, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, ক্যালকুলেটর, ঘড়ি ও প্রয়োজনীয় টাকা সঙ্গে নিবে। এগুলো স্বচ্ছ কোনো ব্যাগে নিলে ভালো হয়। নিষিদ্ধ বা অপ্রয়োজনীয় কোনো কিছু  কেন্দ্রে বহন করা থেকে বিরত থাকবে।

উত্তরপত্র বিষয়ক সতর্কতা-১

♦   উত্তরপত্র গ্রহণের সময় তা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে যেন তাতে কাটাছেঁড়া, ময়লা বা ভাঁজপড়া না থাকে। উত্তরপত্রে কোনো প্রকার সমস্যা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে কোনো কিছু লেখার আগেই তা কক্ষ পরিদর্শককে জানাতে হবে এবং পরিবর্তন করে নেবে।

♦   উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট স্থানে নিজ বোর্ডের নাম, পরীক্ষার নাম, রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোডের ঘর যথাযথভাবে কালো বল পয়েন্ট কলম দ্বারা ভরাট/পূরণ করবে।

♦   Litho Coded প্রচ্ছদের নির্ধারিত স্থানে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয়ের নাম, পরীক্ষার বিষয় ও পত্রের কোড সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করবে এবং OMR এ বৃত্ত ভরাট করবে।

♦   উত্তরপত্রের নির্ধারিত স্থান থেকে উত্তর লেখা শুরু করবে এবং কভার পৃষ্ঠা ব্যতীত অন্য সব পাতার উভয় পৃষ্ঠাতে উত্তর লিখবে।

 

উত্তরপত্রবিষয়ক সতর্কতা-২

♦   উত্তরপত্রের যেসব অংশ বল পয়েন্ট কলম দ্বারা পূরণ করতে বলা হয়েছে তা অবশ্যই কালো বল পয়েন্ট কলম দ্বারা পূরণ করতে হবে।

♦   কভার পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্যত্র কিছু লেখা বা দাগ দেওয়া নিষিদ্ধ। উত্তরপত্র কোনো অবস্থাতেই ভাঁজ করা যাবে না।

*    উত্তরপত্রের কোথাও আপত্তিকর লেখা, অসৌজন্যমূলক মন্তব্য বা অনুরোধমূলক কিছু লেখা যাবে না।

♦   উত্তরপত্রের ভেতরে কোনো জায়গায় পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, মোবাইল/টেলিফোন নম্বর, কলেজের নাম, কেন্দ্রের নাম কোনো অবস্থাতেই লেখা যাবে না। লিখলে উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাবে।

♦   উত্তরপত্র জমা না দিয়ে হল ত্যাগ করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

 

মার্জিন দেওয়ার নিয়মাবলি

♦   উত্তরপত্রের উপরে ১ ইঞ্চির সামান্য বেশি এবং বামপাশে কমপক্ষে ১ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা রেখে মার্জিন দিতে হবে।

♦   মার্জিনে সিঙ্গেল লাইন ব্যবহার করতে হবে। ডাবল লাইন দিতে গেলে সময় বেশি অপচয় হবে। উত্তরপত্রের নিচে আধা ইঞ্চি মার্জিন দিতে হবে।

♦   OMR পূরণ করা হলে প্রশ্ন পাওয়ার পূর্ব সময় পর্যন্ত খাতায় মার্জিন আঁকতে হবে।

♦   মার্জিন দেওয়ার সময় কলম নয়, পেন্সিল ব্যবহার করতে হবে। প্রশ্নপত্রে কোনো কিছু লেখা যাবে না। শুধু উত্তর করা প্রশ্নের নম্বরে (টিক) চিহ্ন দেওয়া যাবে।

♦   মার্জিন দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে, যেন পেন্সিল দিয়ে খাতা ছিঁড়ে না যায়।

♦   বক্স মার্জিন পরিহার করতে হবে কারণ এতে সময় ও জায়গা বেশি নষ্ট হয়।

♦   মার্জিনের বাইরে কোনো নম্বর দেওয়া বা কোনো কিছু লেখা যাবে না।

 

প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর করণীয়

♦ প্রত্যেকটি প্রশ্ন মনোযোগ সহকারে পড়বে।   যে প্রশ্নগুলো ভালো জানা আছে এবং যে প্রশ্নগুলোর উত্তরে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে সেগুলো নির্ধারণ করবে। এরপর সে অনুযায়ী উত্তরদান করবে।  প্রশ্নপত্রে দাগাবে না।

 

প্রশ্নের নম্বর লেখার নিয়মাবলি

♦ প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শুরুর আগে তার নম্বর সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখতে হবে।

♦ প্রশ্নপত্রে যেভাবে প্রশ্নের আউটলাইন (যেমনঃ ১।/১.(১) বা (ক)/ক)/ ক. ইত্যাদি) দেওয়া আছে নম্বর লেখার সময় সেই আউটলাইন ব্যবহার করা উচিত। নম্বরে কোনো কাটাকাটি, ওভার রাইটিং করা চলবে না।

♦  নম্বর সামান্য কাটাকাটি বা ঘষামাজা হলে তা আড়াআড়িভাবে কেটে নতুনভাবে তা লিখতে হবে। প্রশ্নের নম্বর লেখার পর প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।

 উত্তরপত্রের সাজসজ্জা

♦  প্রশ্নের একটি উত্তর লেখা শেষ হলে সমাপ্তি চিহ্ন (#) দিয়ে পরবর্তী উত্তর ২ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে নিচ থেকে শুরু করতে হবে।  প্রশ্নের উত্তর যেভাবে চাওয়া হয়েছে সেভাবে উত্তর দিতে হবে। অথবা প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে উত্তর দিতে হবে।

♦  অতিরিক্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর লেখা যাবে না। বেশি হলে ভালো উত্তরটা রেখে খারাপটা উত্তরটি এক টানে কেটে দিতে হবে।

♦  প্রশ্নের সমগ্র উত্তর এক সঙ্গে লিখতে হবে। পৃথক পৃথক জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে লেখা যাবে না। প্রশ্নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

♦  উত্তর লেখার সময় ভুল করে পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকলে তা লম্বাভাবে কলম দিয়ে কেটে দিতে হবে।

     হাতের লেখা যেমন হবে

♦  হাতের লেখা সুন্দর কিন্তু দ্রুত হতে হবে। সুন্দর না হলেও যেন পরিচ্ছন্ন হয়। হাতের লেখা যেন বাঁকা না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

♦  লেখার সময় অযথা কাটাকাটি বা ঘষামাজা করা যাবে না। কাটতে হলে এক টানে কাটবে।

♦  লেখায় শব্দ থেকে শব্দ বা একটি লাইন থেকে আরেকটি লাইনের দূরত্ব যেন বেশি বা কম না হয়।

♦  লেখা মার্জিন ঘেঁষে শুরু করতে হবে এবং খাতার ডানপ্রান্ত পর্যন্ত লিখতে হবে। ডানে ফাঁকা রাখা যাবে না।

 ♦ খাতার একটি পৃষ্ঠায় কমপক্ষে ১৫ হতে ১৮টি লাইন লিখতে হবে। প্রতিটি লাইনে শব্দ সংখ্যা হবে ৭ হতে ৮টি। প্রতিটি পৃষ্ঠার নিচে কিছু জায়গা ছেড়ে দেবে।

 

পরীক্ষার কেন্দ্রে বিশেষ সতর্কতা

♦  নকল করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এমনকি আশপাশে তাকানো, অন্যের সঙ্গে কথা  বলবে না।

♦  উত্তরপত্র লেখার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন পাশের কেউ না দেখে।

♦  নিজের আসনের কাছাকাছি যেন কোনো কাগজপত্র পড়ে না থাকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকবে।

♦  কলম, পেন্সিল, সার্পনার, ইরেজার, জ্যামিতি বক্স, ক্যালকুলেটর, স্কেল ইত্যাদি অন্যের সঙ্গে আদান-প্রদান করা  থেকে বিরত থাকবে।

♦  প্রশ্নপত্র অন্য কোনো পরীক্ষার্থীর নিকট হস্তান্তর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

♦  নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার আগে  উত্তরপত্র জমা দেবে না।

♦  পরীক্ষা পরিচালনায় জড়িতদের সঙ্গে কোনোরূপ অসৌজন্যমূলক আচরণ, বাকবিতণ্ডা করা থেকে বিরত থাকবে।

♦  পরীক্ষা চলাকালে টয়লেটে না যাওয়াই মঙ্গলজনক। এতে মূল্যবান সময় অপচয় হয়। খুব বেশি প্রয়োজন হলে কক্ষ পরিদর্শকের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এ সময় উত্তরপত্র প্রশ্নসহ কক্ষ পরিদর্শকের কাছে জমা দিতে হবে। প্রশ্ন নিয়ে বাইরে যাওয়া যাবে না। পরীক্ষা শুরুর প্রথম ১ ঘণ্টায় টয়লেটে যাওয়া নিষিদ্ধ।

 

শেষ ১০ মিনিটে রিভিশন

♦  পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ সময়ের অন্তত ১০ মিনিট আগে সব প্রশ্নের উত্তর শেষ করতে হবে। এই সময়ে রিভিশন দেবে।

♦  রিভিশনের সময় যেসব বিষয় খেয়াল করতে হবে— প্রশ্নপত্রের নম্বরের সঙ্গে উত্তরপত্রের নম্বরের মিল আছে কিনা, উত্তরপত্রে প্রশ্নের নম্বর নির্ভুল এবং পরিচ্ছন্নভাবে লেখা হয়েছে কিনা [চলবে]

সর্বশেষ খবর