পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় দখলকারীদের তালিকা প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, পাহাড়গুলো কাদের কাছে ইজারায় আছে? এই যে বিশাল বিশাল লুটেরা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কিংবা সামরিক, বেসামরিক, অবসরপ্রাপ্ত বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক ব্যক্তি, এমপি-মন্ত্রী, কাদের কাদের নামে পাহাড় আছে। পাহাড়গুলো কারা দখল করে আছে তাদের তালিকা প্রকাশ করুন।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম এবং জনগণের অধিকার, মর্যাদা ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধান করার ক্ষমতা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নেই। সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু সরকার চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন। তার মধ্যে একটা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো কাদের দখলে আছে সেগুলো প্রকাশ করা।
তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড় নষ্ট করে পাঁচ তারকা হোটেল বানানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ওখানে একটা পুঁজিবাদের রূপান্তর হয়েছে। এজন্য সেনা শাসনের মাধ্যমে পাহাড়ে বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। কারণ সেনা শাসন থাকলে খবরাখবর বাইরে যাচ্ছে না। কে কোনটা দখল করল তার কোনো জবাবদিহিতা নেই, স্বচ্ছতা নেই।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন বরাদ্দ, উন্নয়ন কর্মসূচি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ জবাবদিহি চাই। সেজন্য শ্বেতপত্র কমিটির মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে কী কী বরাদ্দ গেল, কী কী কর্মসূচি গেল, সেগুলো কীভাবে আছে, কীভাবে ব্যয় হয়েছে সেটা জানার জন্য স্বেতপত্র কমিটি চাই। এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আনু মুহাম্মদ বলেন, পার্বত্য এলাকায় গণহত্যার বিচার, সেনা শাসন প্রত্যাহার, ভূমি সমস্যার সমাধান, সাংবিধানিক স্বীকৃতি হয়নি। স্যাটেলার শব্দ নিয়ে অনেকের মধ্যে মানসিক আপত্তি আছে। ১৯৭৯ সালে স্যাটেলার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তার আগে যে বাঙালিরা সেখানে যায়নি তা না। তাদের নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সহ-অবস্থান করে। কিন্তু সামরিক বাহিনীর প্রকল্পের অংশ হিসেবে যখন দেশের ছিন্নমূল ও গরিবদের পাহাড়ে বসানো হলো তখন থেকেই বাঙালি, পাহাড়ি, স্যাটেলার এই সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে।