সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আকস্মিক কিডনি বিকল

ডা. সহেলী আহমেদ সুইটি

আকস্মিক কিডনি বিকল

অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু রোগ জীবনকে তছনছ করে দেয়। সর্বনাশা আকস্মিক কিডনি বিকলও (AKI) তেমন একটি রোগ, অর্থাত্ হঠাত্ করে এসে মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনে। যদি আকস্মিক কিডনি বিকলের কারণ জেনে তাকে বিতাড়িত করা যায় তাহলে মানুষ মৃত্যুর শত ভয়াবহতল থেকেই মুক্তি পায় না বরং স্বাভাবিক সুস্থ জীবনও ফিরে পেতে পারে শুধু প্রয়োজন সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডায়রিয়া থেকে পানিশূন্যতাই আকস্মিক কিডনি বিকলের অন্যতম কারণ। তাইতো ডায়রিয়া হলে যাতে পানিশূন্যতা না হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে। অনেক সময় তীব্র ব্যথানাশক ওষুধ এবং অ্যান্টিবায়োটিকে কারণে আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। তাই অবশ্যই মনে রাখতে হবে যখন-তখন ইচ্ছামতো ব্যথানাশক ওষুধ কিংবা অ্যান্টিবায়েটিক খাওয়া যাবে না, অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। মহিলারা অনেক সময় গ্রামে গর্ভপাত করেন। অনেক সময় ইনফেকশনসহ অধিক রক্তক্ষরণের কারণেও আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। তাই অবশ্যই মহিলাদের এ ব্যাপারে অধিক সচেতন হতে হবে। অনেক সময় কিডনির পাথরসহ যে কোনো Obstruction এর কারণে আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। এ ব্যাপারে অবশ্যই কারণ বের করে কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে চিকিত্সা নিতে হবে। আকস্মিক ও ধীরগতিতে কিডনি বিকলের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে পুরোপুরি না হলেও কিছুটা যদি মেনে চলা যায় তবে কিডনি রোগের মতো জীবননাশা রোগ থেকে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব। এজন্য আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে এসব লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ মাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে হবে।

করণীয়—শিশুদের গলাব্যথা বা খোসপাঁচড়া হলে অবহেলা করা যাবে না, কারণ তাতে কিডনি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিডনির যে কোনো প্রদাহ বা ইনফেকশনে অতিসত্বর চিকিত্সা করাতে হবে। যারা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তারা অবশ্যই কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত কিডনি চেকআপ করে নিন। কারণ তাদের কিডনি রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা বেশি থাকে। নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত ওষুধ সেবনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নিন। অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যসম্মত আহারের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। অনেক সময় ব্যথানাশক ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিকও কিডনি বিকলের কারণ হয়। ধূমপান পরিহার করুন। ডায়রিয়া হলে অবহেলা করবেন না। কিডনি রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ প্রতিকার প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল

কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর