বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

লালগিরি

আলম শাইন

লালগিরি

ভবঘুরে স্বভাবের পাখি লালগিরি। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা সম্পূর্ণ ভিন্ন। হঠাৎ পুরুষ পাখির দিকে নজর পড়লে মনে হয় কেউ বুঝি মুখ, মাথা এবং গলায় লাল রং ছিটিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ ওদের গায়ের রং আলগা মনে হতে পারে। অপরদিকে স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। একেবারেই নিস্প্রভ চেহারা। চড়ুই অথবা বাবুই পাখির আদলের চেহারা, এমনকি গায়ের রংটাও।

উভয় চটপটে স্বভাবের। ডাকে উচ্চস্বরে। ঘন বনভূমি ও নদীর কাছাকাছি বনপ্রান্তর কিংবা উদ্যানে বিচরণ করে। বিচরণ করে নিন্মভূমির আর্দ্র বন, শুকনো ওক বন ও পার্বত্য বনাঞ্চলে। প্রজনন ভূমি সুইডেন, সাইবেরিয়া, ককেশাস, বেরিং সাগর, ইরানের উত্তরাঞ্চল, জাপান, আফগানিস্তান, পশ্চিম হিমালয়, তিব্বত ও চীন পর্যন্ত। শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ইন্দোচীন, দক্ষিণ ইরান এবং দক্ষিণ-পূর্ব চীনে। বিশ্বে এরা ভালো অবস্থানে নেই। ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। পাখির বাংলা নাম: ‘লালগিরি’, ইংরেজি নাম: ‘কমন রোজফিঞ্চ’, বৈজ্ঞানিক নাম: ঈধত্ঢ়ড়ফধপঁং বৎুঃযত্রহঁং। এরা ‘লাল বঘেরি’ এবং ‘পাতি তুতি’ নামেও পরিচিত। প্রজাতি দৈর্ঘ্যে ১৩-১৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা ও ঘাড় গোলাপি গাঢ় লাল। ডানা ও লেজ গাঢ় বাদামির সঙ্গে গোলাপি লালের সংমিশ্রণ। গলা, বুক গাঢ় গোলাপি লালের সঙ্গে ভারি মিল। পেট সাদার সঙ্গে গোলাপি লালের মিশ্রণ। স্ত্রী পাখির মাথা, পিঠ ও লেজ চকচকে হলদে বাদামি। গলা, বুক ও পেট সাদাটে। ঠোঁট ত্রিকোণাকৃতির, ত্বক-কালচে। পা ধূসর-বাদামি। প্রধান খাবার: ঘাসবীজ, কুঁড়ি, কচিপাতা, ছোট ফল। এ ছাড়াও পোকামাকড় খায়। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট। বাসা বাঁধে ৪-৫ মিটার উঁচু ঝোপ আকৃতির গাছে। লতা, শুকনো ঘাস, চুল, শৈবাল, সরুকাঠি ইত্যাদি বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৪ দিন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর