বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস (এসঅ্যান্ডপি) গ্লোবাল। গতকাল সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের কান্ট্রি রেটিং প্রকাশ করেছে।
অবশ্য ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বা আউটলুক ‘নেতিবাচক’ থেকে ‘ইতিবাচক’ হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে ‘বি প্লাস’ দিয়েছে। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে যা ছিল ‘বি বি মাইনাস’। এ ছাড়া স্বল্পমেয়াদে আগের মতোই ‘বি’ রেটিং দিয়েছে এসঅ্যান্ডপি। বাংলাদেশের রেটিং কমানোর কারণ প্রসঙ্গে সংস্থাটি বলেছে, বহিস্থ খাতে চাপ বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহতভাবে কমে যাওয়ার বিষয়টি রেটিংয়ে প্রতিফলিত হয়েছে। আমদানি ব্যয় কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগ এবং চলতি হিসাবে অপেক্ষাকৃত কম ঘাটতি সত্ত্বেও এমনটি ঘটেছে। এসঅ্যান্ডপির হিসাবে, বর্তমানে বৈদেশিক অর্থায়নের যে প্রয়োজনীয়তা তার পরিমাণ চলতি হিসাবের প্রাপ্তি ও ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের যোগফলকে ছাড়িয়ে গেছে। ইতিবাচক ও নেতিবাচক আরও বেশ কিছু দিক এ রেটিং করার ক্ষেত্রে বিবেচনায় এসেছে। যেমন- এতে মাঝারি ধরনের মাথাপিছু আয় যেমন প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনি নিম্নপর্যায়ের রাজস্ব আয় সক্ষমতা ও উচ্চ সুদের বোঝার বিষয়টিও দেখা হয়েছে। প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশও প্রতিফলিত হয়েছে এ রেটিং প্রতিবেদনে। এসব ইস্যুর সঙ্গে দেশের ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাঝারি ধরনের বৈদেশিক ঋণের বোঝা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো বড় আকারের রেমিট্যান্স, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় সক্ষম তৈরি পোশাক খাতের মতো ইতিবাচক দিকগুলোও পর্যালোচনা করা হয়েছে। এসঅ্যান্ডপির ক্রেডিট রেটিংয়ে মোট ১০টি রেটিং স্কেল রয়েছে। এগুলো হলো- যথাক্রমে ‘এএএ’, ‘এএ’, ‘এ’, ‘বিবিবি’, ‘বিবি’, ‘বি’, ‘সিসিসি’, ‘সিসি’, ‘সি’ ও ‘ডি’। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ঋণমান হচ্ছে ‘এএএ’ এবং সবচেয়ে খারাপ ‘ডি’। অন্যদিকে ভবিষ্যতের জন্য সামগ্রিক পরিস্থিতি বা আউটলুককে সাধারণত ‘ইতিবাচক’ ‘স্থিতিশীল’ ‘নেতিবাচক’ ও ‘উন্নয়নশীল’- এই চার ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ‘স্থিতিশীল’ অবস্থা ধরে রাখার পর গত বছরের জুলাইয়ে নানা কারণে ‘নেতিবাচক’ আউটলুকে নেমে আসে বাংলাদেশ। এদিকে বাংলাদেশ বিষয়ে এসঅ্যান্ডপির প্রতিবেদনে দেশের সাম্প্রতিক নানা বিষয়ের সঙ্গে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনাও উঠে এসেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এসঅ্যান্ডপি বলেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ২০০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন।