কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজধানীর জিগাতলায় গুলিবিদ্ধ রিয়াজ (২৩) নামে এক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি। বরিশালের মুলাদী সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন রিয়াজ।
ঢামেকে তার ভাই হাসান রাসেল জানান, রিয়াজ জিগাতলা এলাকায় বোনের বাসায় থাকত। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলার মোল্লারহাট গ্রামে। বাবার নাম মাহমুদুল্লাহ। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি ধানমন্ডি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। ঢামেক সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে মাঠে ছিলেন রিয়াজ। গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে তার মাথায় একটি গুলি লাগে।
আরও একজনের পরিচয় মিলেছে : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সহিংসতার ঘটনায় নিহত আরও একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি একজন অটোরিকশাচালক, নাম জসিম উদ্দিন সরকার (৩২)। তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নয়ানগর গ্রামে। থাকতেন রাজধানীর উত্তরখান ময়নারটেকে। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে লাশ শনাক্ত করেন জসিমের স্ত্রী বানেছা বেগম। শনাক্তের অপেক্ষায় পড়ে আছে আরও পাঁচজনের বেওয়ারিশ লাশ। গতকাল ঢামেক এ তথ্য জানায়। বানেছা বেগম জানান, গত ৫ আগস্ট দুপুরে বাসা থেকে বের হন জসিম। এর পর থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর পর গত ১৩ আগস্ট জসিমের ফোন খোলা পাওয়া যায়। একজন কল রিসিভ করে বলেন, উত্তরার আজমপুরে ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন জসিম।
পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বজনরা ওই হাসপাতালে যান। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজনকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল। যারা মারা গেছেন, তাদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
ঢামেক হাসপাতাল মর্গের ইনচার্জ রামুচন্দ্র দাস জানান, বৃহস্পতিবার দুটি লাশ শনাক্ত করে নিয়ে যান তাদের স্বজনরা। শুক্রবার জসিমের স্ত্রী তার লাশ শনাক্ত করেন। এখনো সেখানে বেওয়ারিশ পাঁচজনের লাশ রয়েছে।