সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন ৩৫ প্রত্যাশীরা। গতকাল দুপুর দেড়টায় একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শাহবাগে ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী পরিষদের ব্যানারে অবস্থান নেন তারা। এদিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেওয়ায় শাহবাগ মোড় ঘিরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সব সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন কাজে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ। এ সময় ‘বয়স না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আর নয় কালক্ষেপণ, এবার দাও প্রজ্ঞাপন,’ ‘৩৫ এর শৃঙ্খল, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগানে দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। শুরুতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কত অনিয়ম চালু আছে, সে কথা বলতে গেলে একটা ডিকশনারির মতো হয়ে যাবে। কত যে অস্থায়ী নিয়োগ আছে, যখন তখন একেকজনকে কান ধরে বের করে দেওয়া যায়, এমন নিয়মেরও হিসাব নেই। এসবের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে আন্দোলন করেছি, এটা শুধু সরকার পতনের কোনো আন্দোলন ছিল না। আমরা বলেছি এটা দেশ বদলের আন্দোলন, অপশাসন বদলের আন্দোলন। দেশ থেকে বৈষম্য দূর করাই আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার সবকিছু সুন্দরভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি, আমাদের দেশটা বদলে যাচ্ছে। মো. শাকিল নামে এক শিক্ষক বলেন, ৩৫ আন্দোলনের বিকল্প নেই। সচিবরা এখানে আউটসোর্সিংয়ের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছে। শিক্ষার্থীরা তো মেধা দিয়ে প্রবেশ করতে চায়। আরেক শিক্ষক নুরুজ্জামান হীরা বলেন, যারা পরে যোগ দেবেন, তারা সে অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ করব, একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ নিয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করুন।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা হলে বিপর্যয় ঘটে যাবে। এই বয়সে চাকরি পেলে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজে যোগ দিতেই তাদের ৩৭ বছর পার হয়ে যাবে বলে সতর্ক করে আন্দোলনকারীদের দাবি নাকচ করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আবার আন্দোলনে নামেন ৩৫ প্রত্যাশীরা।