টানা বৃষ্টি ও উজানের পানির ঢলে ভয়াবহ বন্যায় দেশের উত্তর-পূর্ব, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১২ জেলায় ১ হাজার ৮০০টির বেশি মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। এতে এসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বিপদে পড়লেও উদ্ধারের জন্য কাউকে জানাতে পারছেন না বানভাসিরা। এ ছাড়া দূরে থাকা স্বজনরা পরিবার-পরিজনের খোঁজ জানতে পারছেন না। এতে চরম উদ্বেগে রয়েছেন তারা। প্রবাস থেকে অনেকেই স্বজনের খোঁজ পাচ্ছেন না বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গতকাল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত ১২ জেলার ১২ হাজার ২৫০টি সাইট বা টাওয়ারের মধ্যে ১০ হাজার ৪৪৩টি সচল আছে।
অচল হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৮০৭টি। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনীতে। এ জেলার ৯০ শতাংশের বেশি টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। এ এলাকার ৬৫৬টি টাওয়ারের মধ্যে ৫৯০টিই অচল হয়ে গেছে। এ ছাড়া নোয়াখালীতে ৩৮০, লক্ষ্মীপুরে ৫৪, কুমিল্লায় ৫৩৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৩, চাঁদপুরে ৪৭, চট্টগ্রামে ৭৫, খাগড়াছড়িতে ৩৬, হবিগঞ্জে ২, মৌলভীবাজারে ৩৯, সুনামগঞ্জে ১১ এবং রাঙামাটিতে ১৭টি টাওয়ার কাজ করছে না।
মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে বিটিআরসি জেনেছে, বন্যাকবলিত অঞ্চলে অপারেটরদের টাওয়ার এলাকা ডুবে গেছে। এসব টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অন্যদিকে তুমুল স্রোতে অন্যান্য প্রয়োজনীয় যান্ত্রিক সহযোগিতা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে নেটওয়ার্ক পুনরায় চালু করা যাচ্ছে না। স্রোত না কমা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক পুনঃসংযোগ করা সম্ভব নয়।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টাওয়ার সচল রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাটারি ব্যাকআপ, ডিজেল জেনারেটর কিংবা পোর্টেবল জেনারেটরের মাধ্যমে টাওয়ার সচল রাখতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু : বন্যার মধ্যে টেলিযোগাযোগ সেবা সচল রাখতে নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে বিটিআরসি। সংস্থাটি বলছে, এ পরিস্থিতিতে ১৫ জনের ইমারজেন্সি রেসপন্স দল গঠন করা হয়েছে। বিটিআরসির ইমারজেন্সি রেসপন্স দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে +৮৮০২২২২২১৭১৫২ নম্বরে ফোন করতে হবে। বিটিআরসির কল সেন্টার ১০০ ব্যবহার করেও ওই দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।