শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুকুরে চিংড়ি চাষ করে সাফল্য

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

পুকুরে চিংড়ি চাষ করে সাফল্য

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় প্রথমবারের মতো বাড়ির পুকুরে অন্যান্য মাছের সাথে একই খরচে গলদা চিংড়ি চাষ করে সফল হয়েছেন উদ্যোমী যুবক মধু মিয়া। মৎস্য চাষীদের জন্য অন্য মাছ চাষের সাথে বাড়তি খরচ ছাড়াই চিংড়ি চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন তিনি। মৎস্য চাষে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে ইতিপূর্বে ‘সফল চাষী’ পদকও লাভ করেন তিনি। 

২০১৩ সালে রুই জাতীয় মাছের রেণু পোনা চাষের মাধ্যমে উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের মধু মিয়ার মৎস্য চাষ শুরু। ‘জিহাদ’ ফিশারি নামে শুরু হয় খামারের যাত্রা। রেণু চাষে লাভমান হওয়ায় ধীরে ধীরে তিনি বাড়ির পার্শ্ববর্তী নীচু জমিতে শুরু করেন নানা জাতের মাছের চাষ। বাদ পড়েনি তার বাড়ির পুকুরও। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তার বাড়ির পুকুরে (২০ শতক জায়গা) ২৪শ' টাকার রুই জাতীয় ১২শ' মাছের পোনার চাষ শুরু করেন। পরে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নির্মণ চন্দ্র বণিকের অনুপ্রেরণায় চিংড়ি চাষের উপর ট্রেনিং নিয়ে ওই পুকুরেই রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, গানিয়, বিগ্রেড, পুটি, টেংরা মাছের সাথে গলদা চিংড়ি চাষের সিন্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে সিলেটের গোলাপগঞ্জ সরকারি হ্যাচারি থেকে ৩ টাকা ধরে ৫ হাজার গলা চিংড়ির পোণা (জুবেনাইল) ক্রয় করেন। শুরু হয় একই পুকুরে সাদা মাছের সাথে গলদা’র চাষ। সাদা মাছের জন্যে দেয়া খাবারেই বেড়ে ওঠে চিংড়ি। চিংড়ির জন্য বাড়তি খাবারের প্রয়োজন পড়েনি। ওই পুকুর থেকে চলতি বছরে তিন ধাপে ১ লক্ষ ৬শ' টাকার রুই জাতিয় মাছ বিক্রি করেন তিনি। পাশাপশি ৭ মাসে বিক্রির উপযোগী হয় গলদা চিংড়ি। গতকাল শুক্রবার সেচ দিয়ে প্রায় ১৭০ কেজি চিংড়ি পাওয়া যায় পুকুরে। ৫০০ টাকা কেজি ধরে যার বাজার মূল্য ৮৫ হাজার টাকা। চিংড়ি চাষে কোনো খরচ না হওয়ায় পুঁজি বাদে ৭০ হাজার টাকা বাড়তি মুনাফা করেন তিনি। 

মধু মিয়া ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-কে জানান, "চিংড়ি চাষে আগ্রহ ছিল না। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাই আমাকে প্রেরণা দেন। মিশ্র চাষ হওয়ায় একই খরচ, কম প্ররিশ্রম ও অল্প সময়ে গলদা চিংড়ি বিক্রি উপযোগী হয়। আমার ধারণা, একক ভাবে এ চিংড়ির চাষ করলে ৫ গুণ মুনাফা করা সম্ভব।" 

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র বণিক বলেন, "বিশ্বনাথের প্রথম সফল চিংড়ি চাষী মধু মিয়া একই পুকুরে মিশ্র মাছের চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মিশ্র চাষে চিংড়ি রাখলে আলাদা খাবারের প্রয়োজন হয় না। তাই অন্য চাষীরাও একই ভাবে চিংড়ি চাষ করে বাড়তি মুনাফা লাভ করতে পারেন।"           


বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা

সর্বশেষ খবর